Table of Contents
তাফসীরে মাযহারী (কুরআনুল কারীম এর তরজমা ও তাফসীর)
তাফসীরে মাযহারী (কুরআনুল কারীম এর তরজমা ও তাফসীর) পিডিএফ - Tafsir al-Mazhari (Quran ul Kareem Tarjama and Tafseer) PDF
পরিচিতি:
তাফসীরে মাযহারী (আরবি: تفسير المظهري) পবিত্র কুরআনের ১৩ তম শতাব্দীর তাফসির গ্রন্থ। হানাফী মাযহাবের একনিষ্ঠ অনুসারী সুন্নি ইসলামী পণ্ডিত কাজী ছানাউল্লাহ পানিপথীর লেখা বইটি। এটি আল্লামা কাজী মুহাম্মদ ছানাউল্লাহ পানিপথী রচনা করেছেন (যিনি ইন্তিকাল করেছেন ১২২৫ হিজরিতে)। তিনি এই তাফসীরের নাম রেখেছেন 'আল-তাফসীর আল-মাযহারী', তাঁর আধ্যাত্মিক গুরু মির্জা মাজহার জান-ই-জানন দেহলভীর নাম অনুসারে। তাঁর এই তাফসীর খুব সহজ, স্পষ্ট এবং কোরআনের আয়াতগুলির সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা শিক্ষার জন্য অত্যন্ত কার্যকর। কুরআনের শাব্দিক বর্ণনার পাশাপাশি তিনি বিশদ বিবরণও দিয়েছেন এই গ্রন্থে। তা করতে গিয়ে তিনি অন্যান্য ভাষ্যগুলির তুলনায় অনেক বেশি তাথ্যিক বর্ণনাকে গ্রহণ করার চেষ্টা করেছেন।
কাযী ছানাউল্লাহ্ ছিলেন ইসলামের মহান খলিফা হজরত ওসমান জিন্নুরাইন রাদ্বিআল্লাহু আনহুর সুযোগ্য উত্তরপুরুষ। ছিলেন আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের এক অনির্বাণ আলোকস্তম্ভ। অনুসারী ছিলেন ইমামশ্রেষ্ঠ আবু হানিফার। আর আত্মিক দিক থেকে সংশ্লিষ্ট ছিলেন ইমাম মোজাদ্দেদে আলফে সানির মহান তরিকার সঙ্গে। তাঁর আধাত্মিক সংশ্লিষ্টতা ওই পরম শ্রদ্ধার্হ ইমামের সঙ্গে সম্মিলিত হয়েছে এভাবেঃ স্বীয় পীর মোর্শেদ শায়েখ মাযহারে শহীদ জানে জাঁনা- শায়েখ নূর মোহাম্মদ বদাউনি- শায়েখ সাইফুদ্দিন সেরহিন্দী- খাজা মোহাম্মদ মাসুম- ইমাম মোজাদ্দেদে আলফে সানি রহমতুল্লাহি আলাইহিম আজমাঈন। এই সূত্রশৃঙ্খলটি আবার একুশজন কালজয়ী আধ্যাত্মিক পুরুষের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়েছে ইসলামের প্রথম খলিফা সিদ্দীকশ্রেষ্ঠ হজরত আবু বকর ইবনে আবু কোহাফার সঙ্গে। তাই এই মহান সম্পৃক্ততার নাম নেসবতে সিদ্দিকী। এভাবে সর্বশ্রেষ্ঠ আধ্যাত্মিক সংযোজনা ও শ্রেষ্ঠতম মাজহাবের নূরে স্নাত হয়েছিলেন বলেই তাঁর প্রতিভা ও সংবেদনা পেয়েছিলো পূর্ণ ও পরিণত আয়তন। তাই তাঁর নির্মাণ এতো আকর্ষণীয়, হৃদয়হারক। তাই তাঁর বক্তব্যে ফুটে উঠেছে বর্ণনাসঞ্জাত বিদ্যার বৃন্তে মনীষা ও অন্তর্দৃষ্টির এই বিরল কমল- রেওয়ায়েত, দেরায়েত ও ফেরাসাতের সুসমঞ্জস বৈভব।
তাঁর সম্মানিত পূর্বপুরুষগণের অনেকেই ছিলেন দায়িত্ববান বিচারকর্তা। পারিবারিক ঐতিহ্যানুযায়ী তাঁকেও অভিষিক্ত হতে হয়েছিলো পানিপথ শহরের বিচারকর্তার গুরুত্বপূর্ণ পদমর্যাদায়। প্রতিদিন এক মঞ্জিল কোরআন পাঠ এবং একশত রাকাত নফল নামাজ ছিলো তাঁর পবিত্র অভ্যাসের অন্তর্গত। এর মধ্যেই চলতো পঠন-পাঠন, অধ্যয়ন, গ্রন্থ-রচন। ভারতবর্ষের অপসৃয়মান মুসলিম শাসনের সময় এই অনন্যসাধারণ জ্ঞানতাপস এভাবেই জ্যোতির্ময় করে তুলেছিলেন তাঁর পৃথিবীর জীবনকে। তারপর একসময় আল্লাহ্র অমোঘ বিধানানুসারে অন্য সকলের
মতো তিনিও পান করলেন তাঁর একান্ত আরাধ্য প্রেমাস্পদের মিলনসুধা। সেদিন ছিলো ১০ই রমজান। ১২২৫ হিজরী সন। ঐতিহাসিক পানিপথ শহরে এখনো তাঁর পবিত্র সমাধি আল্লাহ্ প্রেমিকগণের এক আকর্ষণীয় তীর্থস্থল। এই খণ্ডটি অনুবাদ করেছেন প্রিয় আধ্যাত্মিক আত্মজ মাওলানা মোহাম্মদ অহিদুল্লাহ্। প্রতিবারের মতো এই বঙ্গয়ানটির সযত্ন ও সতর্ক পরীক্ষা-পর্যালোচনা-সম্পাদনার জন্য অভিনিবেশী হতে হয়েছে যুথবদ্ধ খানকাবাসী তাফসীর কর্মীগণকে। সকল মহৎ ও বৃহৎ কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে এমতো নেপথ্য-পরিচর্যা যেনো অবধারিত। বাংলা অনুবাদক মাওলানা তালেব আলী ও প্রকাশনী হাকিমাবাদ খানকায়ে মোজাদ্দেদিয়া