বিশ্ববিদ্যালয় জীবন : নিজেই নিজের অভিভাবক

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন : নিজেই নিজের অভিভাবক
Join Telegram for More Books
Table of Contents

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন : নিজেই নিজের অভিভাবক 

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন : নিজেই নিজের অভিভাবক

(toc)

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের চার-পাঁচ বছর জীবনগঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পরিবার, সমাজ, দেশ তথা নিজেকে একটি ভালো কর্মজীবন উপহার দিয়ে ভালো মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কয়েকটি দিক নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন।


ভালো বন্ধু নির্বাচন

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এসে প্রথম এবং প্রধান কাজ হলো বন্ধু নির্বাচন । ভালো মানসিকতার বন্ধু-বান্ধবের সাথে মেশা উচিত। যাদের স্বপ্ন বড়, চিন্তার জায়গাটা বিশাল, যারা নেতিবাচকতাকে স্থান দেয় না এমন বন্ধুদের সাথেই সময় কাটানো উচিত। আপনি আপনার বাকি জীবন কীভাবে পার করবেন সেক্ষেত্রে একটা মুখ্য ভূমিকা রাখবে এই বন্ধুরা। ‘সৎ ও করে, পড়ানোর পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ' এই বাক্যের সাথে বাস্তবে পরিচিত না হলেও এখানে হর হামেশাই দেখতে পাবেন। বন্ধু যেমন স্বপ্ন তৈরি করে । দিতে পারে, আবার বন্ধুই পারে স্বপ্নকে পিষে মেরে ফেলতে।


নিয়মিত পড়াশুনা

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের। লেখাপড়া হওয়া উচিত আনন্দ এবং উৎসাহময়। এখানে জ্ঞানের চর্চা এবং জ্ঞানের সৃষ্টি হবে। নিয়মিত পড়ানো সহপাঠ কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের করতে হবে। পড়াশুনার ব্যাপারটি। বিভিন্ন ধরনের সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত অনেকটা অনুশীলনের মতো। নিয়মিত চর্চা না করলে আপনার জ্ঞান কমে যেতে থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের লেখাপড়া শুধু পাঠ্যবই কেন্দ্রিক না। বেশ কিছু অতিরিক্ত বই আপনাকে ধরনের সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ততা পড়তে হবে যেগুলো আপনার জ্ঞানের গভীরতাকে আরও সমৃদ্ধ করবে।


ফলাফল

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে অবশ্যই ভালো ফলাফলের দিকে নজর দেওয়া উচিত। ভালো ফলাফলের জন্য সারাদিন পড়ালেখা করতে হয় না । নিয়মমাফিক পড়ানো ও পরীক্ষার আগের সময়গুলো ঠিকমতো কাজে লাগালেই ভালো, যা পরবর্তীতে চাকরি জীবনে অনেক ফলাফল করা সম্ভব। ক্লাসে ভালো ফলাফল করলে শিক্ষকদের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার ! জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাহায্য প্রয়োজন হয়। সর্বোপরি মনে রাখতে হবে ভালো ফলাফলের কদর সবসময়ই দুনিয়াতে থাকবে।


হল জীবন

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা বড় অংশ হলে থাকে। হল জীবন যেমন সুখের তেমন কিছুটা তিক্ত অভিজ্ঞতারও। একটি হলের মধ্যে বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন । আর্থ-সামাজিক অবস্থানের অনেক শিক্ষার্থী থাকে। এর মধ্যে একজন শিক্ষার্থী বৈচিত্র্যের শিক্ষালাভ করে। বিভিন্ন অঞ্চলের বন্ধু হয়। তারা একত্রে পড়ানো নিয়ে তর্ক করে, গবেষণা করে। এতে তাদের বিদ্যালাভের পাশাপাশি মননও বিকশিত হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে হলের তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্যে থাকে খাবার, বাসস্থান, গেস্টরুম বা র‍্যাগিং কালচার। কিছু প্রতিকূলতা থাকলেও এর মধ্যে যারা নিজগুণে টিকে থাকতে পারে, তারাই একসময় সহিষ্ণু, মানবিক ও সহানুভূতিশীল হয়।


সহপাঠ কার্যক্রম

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ধরনের সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হতে হবে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ডিবেটিং ক্লাব, ইংলিশ ক্লাব ইত্যাদি সংগঠন থেকে শুরু করে নানা ধরনের যুগোপযোগী সংগঠন রয়েছে। এ থাকলে একজন আত্মকেন্দ্রিক শিক্ষার্থীও সবার সাথে মিলে-মিশে চলার দক্ষতা ও একটি টিমকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করবে। এছাড়াও বিভিন্ন ওয়ার্কশপ, সেমিনার, ক্যারিয়ার ক্লাব, ভলান্টিয়ারিং, ফ্রি ইন্টার্নশীপ, খণ্ডকালীন পারবেন। চাকরি ইত্যাদিতে সুযোগ হলে যাবেন । সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।


দক্ষতা বাড়ানো

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আপনাকে অনেকগুলো বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। যেমন— ইংরেজি, জীবন। তাই এই জীবনের প্রতিটি কম্পিউটার, উপস্থাপনা, নেতৃত্ব, যোগাযোগ দক্ষতা ইত্যাদি। শুরুতে ইংরেজিটা ভালো করে শিখতে পারলে বাকি সব সহজ হয়ে যাবে। মনে রাখবেন, জীবনে আপনি যা-ই করতে চান না কেন ইংরেজি আপনাকে পদে পদে এগিয়ে রাখবে। কম্পিউটার দক্ষতা যেমন ওয়েবসাইট বানানো, পোস্টার ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, এনিমেশন, পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন, প্রোগ্রামিং, লেখালেখি বা অন্যকিছু। এ দক্ষতাগুলো পরবর্তীতে প্রফেশনাল এক্সপেরিয়েন্স বা । এক্সট্রা কোয়ালিফিকেশন হিসেবে চাকরি পেতে আপনাকে সাহায্য করবে।


টিউশনি করা 

প্রথম বর্ষ থেকেই এক দুইটা টিউশনি করা উচিত। তাতে নিজের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ও স্বাধীনতা আসে এবং পরিবারের ওপর অর্থনৈতিক চাপ কমে। টিউশনির পাশাপাশি কোচিং সেন্টারেও ক্লাস নিতে পারেন। কোচিং এ ক্লাস নেওয়া ও টিউশনি করানোর ফলে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্বচ্ছলতার চেয়েও চাকরির প্রস্তুতিতে বেশি সহায়ক ভূমিকা পালন করে।


নিজেই নিজের অভিভাবক

বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন হলো মুক্ত ও স্বাধীন । আপনার কী করা উচিত এবং কী করা উচিত না। সেটা বোঝার ক্ষমতা থাকতে হবে। এখানে আপনার অভিভাবক আপনি নিজেই। সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয় জীবনটা হওয়া উচিত পড়ালেখা এবং গঠনমূলক কার্যক্রমের সমন্বয়। তাহলেই আপনার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন সার্থক হয়ে উঠবে এবং আপনি আপনার লক্ষ্যে পৌছাতে পারবেন।

পরিশেষে, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের মূল্যবান সময় আমরা অনেক ক্ষেত্রে দরকার নয় এমন কাজ করে শেষ করে দক্ষতা বাড়ানো) বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ফেলি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন হচ্ছে আপনাকে অনেকগুলো বিষয়ে দক্ষতা আগামী দিনগুলোর প্রস্তুতি গ্রহণের মুহূর্তকে কাজে লাগাতে হবে নতুন কিছু জানতে, নতুন কিছু করতে এবং নতুন কিছু সৃষ্টি করতে।


WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now