প্রতিবেদন - নবম ও দশম শ্রেণি, এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের বাংলা ২য় পত্র

প্রতিবেদন - নবম ও দশম শ্রেণি, এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের বাংলা ২য় পত্র Report - Class 9 & 10
Join Telegram for More Books
প্রতিবেদন - নবম ও দশম শ্রেণি, এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের বাংলা ২য় পত্র

প্রতিবেদন - নবম ও দশম শ্রেণি, এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের বাংলা ২য় পত্র

(toc)


প্রতিবেদন : প্রতিবেদন বলতে কোনো নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যানুসন্ধানভিত্তিক বিবরণী বোঝায়। কোনো ঘটনা, তথ্য বা বক্তব্য সম্পর্কে সুচিন্তিত বক্তব্য প্রদানই প্রতিবেদন। প্রতিবেদন কথাটি ইংরেজি রিপোর্ট কথাটির বাংলা পারিভাষিক শব্দ। সাধারণত কোনো বিষয়ের তথ্য-উপাত্ত, সিদ্ধান্ত, ফলাফল ইত্যাদি খুঁটিনাটি অনুসন্ধানের পর বিবরণী তৈরি করে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোনো কর্তৃপক্ষের বিবেচনার জন্য প্রতিবেদন পেশ করা হয়।

প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য : প্র্রতিবেদনের উদ্দেশ্য হলো নির্দিষ্ট কোনো বিষয়বস্তু সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে সুস্পষ্টভাবে অবহিত করা। এর বক্তব্য হবে নিরপেক্ষতার বৈশিষ্ট্য অনুসারী। এতে জটিল বিষয়ের ব্যাখ্যা থাকবে। প্র্রতিবেদনে কোনো বিষয় সম্পর্কে মতামত প্র্রকাশ করা হয়। প্র্রতিবেদন কাজের সমন্বয় সাধন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে।


প্রতিবেদনের শ্রেণিবিভাগ :

প্রতিবেদনকে নির্দিষ্টভাবে শ্রেণিবিভাগ করা সম্ভব নয়, কেননা বিষয়ের বৈচিত্র্য অনুযায়ী প্রতিবেদনও নানা প্রকার হয়ে থাকে। বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে প্রতিবেদনকে নানা নামে ও বিশেষণে অভিহিত করা হয়। তবে মোটাদাগে প্রতিবেদনকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা :

১. সংবাদ প্রতিবেদন : সংবাদপত্রে প্রকাশিত কোনো ঘটনাসম্পর্কিত প্রতিবেদনকে সংবাদ প্রতিবেদন বলে। নিজস্ব সংবাদদাতা বা প্রতিবেদক এবং বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংবাদ সংস্থার মাধ্যমে এসব সংবাদ সংগ্রহ করা হয়।

২. দাপ্তরিক বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন : দাপ্তরিক বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন এমন এক ধরনের বিবরণ যাতে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো ঘটনা, স্থান, অবস্থা প্রভৃতি বিষয় যাচাই করে সে-সম্পর্কিত তথ্য, তত্ত¡, উপাত্ত তুলে ধরা হয়। দাপ্তরিক প্রতিবেদন দুই ধরনের হয়। যেমন : (ক) তদন্ত প্রতিবেদন : এটি কোনো ঘটনা, দুর্ঘটনা, গোলযোগ, হত্যাকাণ্ড ইত্যাদি সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশ তদন্ত সাপেক্ষে প্রকাশ করা হয়। (খ) কারিগরি প্রতিবেদন : এটি সাধারণত উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয়, প্রযুক্তিগত সম্ভাব্যতা, জনস্বার্থে অবদান, অর্থনৈতিক লাভালাভ ইত্যাদি বিষয়ে তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।


প্রতিবেদনের উপযোগিতা :

বর্তমান সমাজব্যবস্থায় প্রতিবেদনের সীমা-পরিসীমা যেমন তেমনি এর উপযোগিতা ও গুরুত্ব অপরিসীম। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ বা বিবরণের জন্য প্রতিবেদনের কোনো বিকল্প নেই। প্রতিবেদনে কোনো বিশেষ ঘটনা বা বিষয়কে সরেজমিনে তদন্ত করে পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষলব্ধ ফলাফল প্রকাশ করা হয় বলে, তা থেকে আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় খুঁটিনাটি তথ্য অবগত হওয়া যায়। কর্তৃপক্ষও সহজে সেই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিরূপণ, সমন্বয়সাধন ইত্যাদি কাজে সহায়তা পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু পরিচালনা, নীতি নির্ধারণে প্রতিবেদন সহায়ক হয়।


একটি সাধারণ প্রতিবেদনের কাঠামো বা অংশবিভাজন 

একটি প্রতিবেদনকে প্রধানত চারটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন :

১. শিরোনাম ২. সূচনা অংশ ৩. বিষয়বস্তু ৪. প্রতিবেদকের নাম-ঠিকানা, স্বাক্ষর ও অন্যান্য বিষয়।


১. শিরোনাম : প্রতিবেদনের শিরোনাম আকর্ষণীয় হতে হবে। প্রতিবেদনের যেটা সারাংশ, কিংবা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ বা প্রতিবেদনের যেটা জরুরি অংশ সেটাই শিরোনাম হবে। শিরোনাম যথাসম্ভব ছোট রাখা আবশ্যক।

২. সূচনা অংশ : প্রতিবেদনের যেটা একেবারে সূচনাংশ তা প্রতিবেদনের বাকি অংশের তুলনায় গুরুত্ব বেশি। তার কারণ, এটির দ্বারা আকৃষ্ট হলে তবেই একজন পাঠক গোটা খবরটি পড়তে উৎসাহী হবেন। সূচনা অংশ এমনভাবে লেখা উচিত যেন প্রতিবেদনের বাদ বাকি অংশ সম্পর্কে পাঠকের কৌত‚হল জাগ্রত হয়।

৩. বিষয়বস্তু : এ অংশে প্রতিবেদনের শিরোনাম অনুযায়ী বিষয়বস্তুর তথ্যনির্ভর বস্তুনিষ্ঠ আলোচনা থাকবে। অর্থাৎ ‘কে, কী, কেন, কবে ও কোথায়, এসব প্রশ্নের মাধমে প্রতিবেদনের মূল বিষয়গুলো খুঁজে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো রেখে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা ছাঁটাই করতে হবে এবং তথ্যনির্ভর সংবাদ উপস্থাপন করতে হবে।

৪. প্রতিবেদকের নাম-ঠিকানা, স্বাক্ষর ও অন্যান্য বিষয় : এ অংশে প্রতিবেদকের নাম-ঠিকানা, স্বাক্ষর, প্রতিবেদন তৈরির সময়, সংযুক্তি (কোনো প্রকার ছবি বা ডকুমেন্ট ইত্যাদি), তারিখ ইত্যাদি উল্লেখ করা যেতে পারে।

প্রতিবেদন রচনায় অনুসরণীয় বৈশিষ্ট্য

১। সুনির্দিষ্ট কাঠামো : কোনো প্রতিবেদন প্রণয়নকালে একটি নির্দিষ্ট কাঠামো অনুসারে করতে হয়। এতে থাকবে একটি শিরোনাম, প্রাপকের নাম-ঠিকানা, আলোচ্য বিষয়ের সূচিপত্র, বিষয়বস্তু, তথ্যপঞ্জি, স্বাক্ষর, তারিখ ইত্যাদি।

২। সঠিক তথ্য : প্রতিবেদন রচিত হবে সঠিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে। তথ্যানুসন্ধানই হলো প্রতিবেদকের প্রধান কাজ। সেজন্য তথ্যের যথার্থতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করতে হবে।

৩। সম্পূর্ণতা : প্রতিবেদনে যেসব তথ্য পরিবেশিত হবে তা হতে হবে নির্ভুল ও সম্পূর্ণ নির্ভরযোগ্য।

৪। স্পষ্টতা : প্রতিবেদনের বক্তব্যের মধ্যে স্পষ্টতা থাকবে যাতে বক্তব্য বিষয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ সহজ হয়।

৫। সংক্ষিপ্ততা : প্রতিবেদন হতে হবে বাহুল্যবর্জিত। বক্তব্য হবে সুনির্বাচিত এবং কোনো অনাবশ্যক বক্তব্য সংযোজিত হতে পারবে না।

৬। সুন্দর উপস্থাপনা : প্রতিবেদনের উপস্থাপন হতে হবে আকর্ষণীয়। এর বক্তব্য যেন সহজ-সরল ভাষায় প্রকাশ পায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

৭। সুপারিশ : প্রতিবেদনের উপসংহারে সুপারিশ সংযোজন করতে হবে, যাতে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ সমস্যা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।



১. তোমার এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে পত্রিকায় প্রকাশের জন্য একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

জুরাইন এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির করুণ চিত্র

বিশেষ প্রতিবেদক : জুরাইন ঢাকার একটি স্বনামধন্য এলাকা। এখানে প্রায় ৩০ হাজার লোক বাস করে। অভিজাত এলাকা হওয়ায় এখানে বসতি গড়ার প্রতি অনেকেরই আগ্রহ রয়েছে। মানুষের চাহিদার দিকে খেয়াল রেখে এখানে নতুন নতুন আবাসন প্রকল্পও গড়ে উঠছে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমানে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। গত দুই মাসে জরিপ করে দেখা যায়, এখানে ইতোমধ্যে প্রায় ৪টি ধর্ষণ, ২টি শিশু নির্যাতন এবং ১৫টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, টাকা ইত্যাদি মূল্যবান সম্পদ হারানো এখানকার নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এলাকায় ক্ষমতাবান রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দৌরাত্ম্য চোখে পড়ার মতো। অবৈধভাবে জমি দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ইত্যাদি ঘটনারও তথ্য পাওয়া যায়। এসব ব্যাপারে জনগণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিষ্ক্রিয় দর্শকের ভ‚মিকা পালন করে থাকে। পুলিশের কাছে সহায়তা চাইলেও কার্যকরী সহায়তা পাওয়া বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

ধর্ষণের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে অনেক পিতা-মাতাই মেয়েকে স্কুলে পাঠানোর ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেছেন। সন্তানের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে তারা অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। এর পাশাপাশি যে কয়েকটি শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে তাও অত্যন্ত দুঃখজনক। বাসার গৃহপরিচারিকার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেও নির্যাতনকারীরা অর্থের জোরে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। এতে করে এলাকায় অনৈতিক কর্মকাণ্ড আরও বাড়তে পারে বলে মত দিয়েছেন সুশীল সমাজ।

অনতিবিলম্বে যদি জুরাইন এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনা যায় তবে এলাকাবাসীকে চরম পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে। এক্ষেত্রে সরকার এবং সাধারণ জনগণের একত্রিত অংশগ্রহণ আবশ্যক। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই উক্ত এলাকার সকল অনিয়ম ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডকে প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।

প্রতিবেদক
শরিফুন নাহার

জুরাইন, ঢাকা।
১৩/০৫/২০২২



২. কামরুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আয়োজিত মহান একুশে ফেব্রুয়ারি- ২০১৫-এর উদ্যাপন উপলক্ষে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

মাননীয়
প্রধান শিক্ষক,
কামরুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
টিকাটুলি, ঢাকা।

বিষয় : বিদ্যালয় আয়োজিত মহান একুশে ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠানমালা বিষয়ে প্রতিবেদন।

জনাবা,

কামরুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজিত একুশে ফেব্রুয়ারি উদ্যাপন সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন আপনার সদয় অবগতির জন্য উপস্থাপন করলাম। 

মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উদ্যাপিত

মহান একুশে ফেব্রুয়ারি-২০১৫ উদ্যাপন উপলক্ষে কামরুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে। প্রভাতফেরি, পুষ্পস্তবক অর্পণ, কবিতা আবৃত্তি, দেশাত্মবোধক গান, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, নৃত্য, আলোচনাসভা ইত্যাদি আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়। প্রধান শিক্ষিকা জোবায়দা আকতারের নেতৃত্বে ভোর ৬টায় ব্যানার-ফেস্টুনসংবলিত প্রভাতফেরি বিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী শহিদ মুরাদ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে স্থাপিত শহিদ মিনারে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। সকলেই সমবেত কণ্ঠে গেয়ে ওঠে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি।’


অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ভাষা দিবসের ওপর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষকমণ্ডলী ও আমন্ত্রিত অতিথিরা সভাস্থলে আসন গ্রহণ করেন। একের পর এক শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করে কবিতা আবৃত্তি, দেশাত্মবোধক গান ও নৃত্য। তারপর শুরু হয় আলোচনা সভা। প্রধান শিক্ষিকার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশিষ্ট ভাষাসৈনিক অধ্যাপক আবদুল গফুর। বিশেষ অতিথি ছিলেন ৭৫ নং ওয়ার্ড ডিসিসি কমিশনার জয়নুল হক মঞ্জু, সমাজসেবী সাব্বির আহমেদ আরিফ ও মোজাম্মেল হক মুক্তা। প্রধান অতিথি চিত্রাঙ্কনে বিজয়ীদের হতে পুরস্কার তুলে দেন। পরে সভাপতি দিনব্যাপী আয়োজনে উপস্থিতি সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানটি বাংলা ভাষা ও শহিদদের প্রতি আমাদের মাঝে গভীর শ্রদ্ধা ও মমত্ববোধ জাগিয়ে তোলে।

প্রতিবেদক
মাধবী আকতার

দশম শ্রেণি
বিজ্ঞান শাখা, রোল-১১
২৪/০২/২০২২



৩. তোমার বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

বরাবর,
সভাপতি
পরিচালনা পর্ষদ
ঘিওর ডিএন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, মানিকগঞ্জ।

বিষয় : বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ সম্পর্কে প্রতিবেদন।

জনাব,

ঘিওর ডিএন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুতির বিষয়ে নির্দেশিত হয়ে নিম্নোক্ত প্রতিবেদন আপনার সমীপে উপস্থাপন করলাম।

শিক্ষার পরিবেশ নেই ঘিওর ডিএন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে

ঘিওর উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঘিওর ডিএন উচ্চ বিদ্যালয়টি উপজেলার শীর্ষস্থানীয় একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অর্ধশতাধিক বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটি এলাকার শিক্ষা বিস্তারে অসামান্য অবদান রেখে আসছে। কিন্তু সা¤প্রতিককালে কিছু অব্যবস্থাপনা ও সিদ্ধান্তহীনতায় বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ও লেখাপড়ার মান দিন দিন নিম্নমুখী হচ্ছে। সমস্যাগুলো নিচে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো :

১. সময় ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম : বিদ্যালয়ে বেশ কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকা দেরিতে উপস্থিত হন। নির্দিষ্ট সময়ে তাদের অনুপস্থিতির ফলে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে হইচই ও হট্টগোল করতে থাকে। ফলে শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিঘিত হয়। অভিভাবকরা এ নিয়ে অভিযোগ করলেও কোনো ফল হয়নি।

২. অনুপযোগী শ্রেণিকক্ষ : শ্রেণিকক্ষগুলো প্রতিদিন যথাযথভাবে পরিষ্কার করা হয় না। বেশ কয়েকটি শ্রেণিকক্ষের হোয়াইট বোর্ড ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে পাঠদান কার্যক্রম মারাত্মভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ভাঙা বেঞ্চগুলোর দ্রুত মেরামত প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।

৩. অব্যবস্থাপনাপূর্ণ পাঠাগার : অব্যবস্থাপনায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়ের পাঠাগার কক্ষ। বইয়ের সংখ্যা অপ্রতুল। ইস্যুকৃত বইগুলো ফেরতের যথাযথ উদ্যোগ না নেওয়ার ফলে দিন দিন বইয়ের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এসব কারণেই জরুরি ভিত্তিতে পাঠাগার ব্যবস্থাপনায় যথাযথ শৃঙ্খলা আনা একান্ত প্রয়োজন।

৪. সুযোগ-সুবিধাহীন বিজ্ঞানাগার : বিজ্ঞানাগারে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। ফলে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা দায়সারাভাবে ব্যবহারিক ক্লাস সম্পন্ন করে। একটু নজর দিলেই যেখানে সবকিছু সুষ্ঠুভাবে করা সম্ভব। সেখানে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে না। হাতে-কলমে শেখার পরিবর্তে তা হচ্ছে সাধারণ পাঠদানের মতো করেই। রসায়ন, পদার্থ ও জীববিজ্ঞানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শিক্ষা থেকে যাচ্ছে অপূর্ণাঙ্গ। এ অবস্থা থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষা করা প্রয়োজন।

৫. প্রশাসনিক কজে বিশৃঙ্খলা : শিক্ষার্থীদের ভর্তি, বেতন গ্রহণ, ছাড়পত্র প্রদান, প্রশংসাপত্র ইস্যু, রেজিস্ট্রেশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সার্ভিস প্রদানের ক্ষেত্রে যথাযথ সহাযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন বেশ কিছু অভিভাবক। 

৬. জাতীয় দিবস পালনে অনীহা : বর্তমানে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় জাতীয় দিবস পালনের কোনো কর্মসূচি নেওয়া হয় না। ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে জাতীয় চেতনাবোধ জাগ্রত হচ্ছে না। কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে যথাযথভাবে ধারণ করার পাশাপাশি নিয়মিতভাবে জাতীয় দিবসসমূহ পালন করার যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

ঐতিহ্যবাহী ঘিওর ডিএন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে উল্লিখিত বিষয়গুলোতে কর্তৃপক্ষের মনযোগ দেওয়া এখন সময়ের দাবি। 


প্রতিবেদক
মিথুন কামাল

নবম শ্রেণি, মানবিক শাখা
রোল নং-১৫
১৮/১০/২০২২


৪. তোমার স্কুলে অনুষ্ঠিত বার্ষিক ক্রীড়া-প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন রচনা করো। 

তারিখ : ২০/০৩/২০২২
বরাবর
প্রধান শিক্ষক,
মনোহরদি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
মনোহরদি, নরসিংদী

বিষয় : স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠান-সম্পর্কিত প্রতিবেদন।

জনাব,

আপনার আদেশক্রমে স্কুলে অনুষ্ঠিত বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার একটি প্রতিবেদন আপনার সদয় অবগতির জন্য পেশ করছি।

মনোহরদি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে
বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

গত ১৭ই মার্চ মনোহরদি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। ক্রীড়া শিক্ষক সোবহান চৌধুরীর সার্বিক তত্ত¡াবধানে, স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ঐকান্তিক সহযোগিতা ও প্রচেষ্টায় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সুন্দরভাবে পরিচালিত ও সাফল্যমণ্ডিত হয়েছে। অন্যবারের তুলনায় এবার এই স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বিষয় যেমন ছিল অনেক, তেমনি ছিল বৈচিত্র্যপূর্ণ, যে জন্য সব শিক্ষার্থীই কমবেশি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিল।

সকাল নয়টায় প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলেজের সম্মানিত প্রধান শিক্ষক। প্রধান অতিথি ছিলেন দেশবরেণ্য ক্রীড়াবিদ জোবায়রা রহমান লিনু। অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন ঘোষিত হয়।

এবারের প্রতিযোগিতার বিষয়গুলো ছিল বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ। বিশটিরও বেশি বিষয়ে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। এগুলোর মধ্যে বিভিন্ন রকমের দৌড়, দীর্ঘলাফ, উচ্চলাফ, বর্শা নিক্ষেপ, চাকতি নিক্ষেপ, লৌহগোলক নিক্ষেপ, প্রতিবন্ধক দৌড়, দ্রæত হাঁটা, সাইকেল দৌড় ইত্যাদি ছিল অন্যতম। পুরুষ অতিথিদের জন্য ছিল ‘অন্ধের হাঁড়ি ভাঙা খেলা’ এবং আমন্ত্রিত মহিলাদের জন্য ছিল ‘মিউজিক্যাল চেয়ার’। এ খেলা দুটি খুবই উপভোগ্য হয়েছে। শিক্ষকগণের জন্য ছিল উল্টো দৌড়। শিক্ষিকাগণের জন্য ছিল ‘সুঁইয়ে সুতা গাঁথা’। সবশেষে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যগণ এবং শিক্ষকগণের মধ্যে ‘রশি টানাটানি’ হয়। এ খেলাটি অসম্পূর্ণ অবস্থায় শেষ হয়। দর্শকদের মাঝে এটি ভিন্ন মাত্রার আনন্দ দেয়। 

প্রতিযোগিতা শেষে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদের পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেক বিজয়ীকে একটি করে ক্রেস্ট এবং সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রাজা মিয়া চারটি ইভেন্টে প্রথম হয়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিযোগীর সম্মান অর্জন করে। মেয়েদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রতিযোগীর কৃতিত্ব অর্জন করে দশম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া খাতুন।

ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উপলক্ষে এবার বিদ্যালয়ের বিশাল মাঠ যেভাবে সাজানো হয়েছিল তা সবার দৃষ্টি কেড়েছে। তাছাড়া এবারের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজনও ছিল অত্যন্ত চমৎকার। ক্রীড়ানুষ্ঠানের উদ্বোধন, পায়রা ওড়ানো, মশাল প্রজ্বলন, প্রতিযোগীদের কুচকাওয়াজ ইত্যাদি আনুষ্ঠানিকতা অত্যন্ত সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’ এই খেলায় যারা অংশ নিয়েছে তারাও অত্যন্ত রুচিবোধের পরিচয় দিয়েছে। এছাড়া অনুষ্ঠানের ধারাবর্ণনা ছিল চমৎকার।

অনুষ্ঠানটি সফল করতে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ সকলেই আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। প্রধান অতিথি এবং বিশেষ অতিথি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে যে বক্তব্য রেখেছেন তা অবশ্যই তাদেরকে উৎসাহ, আগ্রহ ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

এ কথা স্বীকার করতে কোনো দ্বিধা নেই যে, এবারের ক্রীড়ানুষ্ঠান স্কুলে সুনাম বৃদ্ধি করেছে এবং সহশিক্ষা কার্যক্রমের চর্চায় নতুন মাত্রা যোগ করতে সক্ষম হয়েছে।

বিনীত প্রতিবেদক
কামরুল আহসান

দশম শ্রেণি, বিজ্ঞান বিভাগ
রোল নং- ১৫



৫. দুর্নীতি সম্পর্কে পত্রিকায় প্রকাশের জন্য একটি প্রতিবেদন রচনা করো। 

উত্তর :

তারিখ : ২৬শে আগস্ট, ২০২২
বরাবর
সম্পাদক
দৈনিক ইত্তেফাক
কারওয়ান বাজার,
ঢাকা-১২০৫।

জনাব,

আপনার বহুল প্রচারিত পত্রিকার ‘চিঠিপত্র’ কলামে প্রকাশের জন্য ‘দুর্নীতিমুক্ত সমাজ চাই’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পাঠাচ্ছি। সাম্প্রতিক সময়ের গুরুত্ববহ এ বিষয়টির উপযোগিতা বিচার করে আপনার পত্রিকায় প্রকাশ করবেন বলে আশা করছি।

দুর্নীতিমুক্ত সমাজ চাই

দুর্নীতি যেকোনো দেশ ও জাতির উন্নয়নের পথে অন্যতম বাধা। শাসনব্যবস্থাকে ক্রমশ দুর্বল করে দেয় দুর্নীতি। দুরারোগ্যে ব্যাধির মতো দুর্নীতি ধীরে ধীরে গ্রাস করে নেয় সবকিছু। দেশের সকল স্তরে এর ভয়াবহ প্রভাব পড়ে। ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং সামাজিক জীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসে। প্রতিটি মানুষ দুর্নীতির চক্রে পড়ে নাকাল হয়। উচ্চস্তরের কর্তাব্যক্তিরা দুর্নীতিকে আশ্রয় করে নিশ্চিত জীবনযাপনের প্রয়াস চালায়। কিন্তু তাদের বিলাসিতার চরম মূল্য দিতে হয় সাধারণ মানুষকে। মধ্যবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণির লোকেরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করে না। নীরব দর্শকের মতো তারা চুপ করে সহ্য করে যায় শোষণ ও নিপীড়ন। প্রকাশ্যে হোক কিংবা অপ্রকাশ্যে বাড়তি উপার্জনের আশায় প্রায় সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীই দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে থাকে। মেধার চেয়ে বর্তমানে অর্থই প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছে সব ক্ষেত্রে। কালো টাকার দৌরাত্ম্যে প্রতিনিয়ত পিষ্ট হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। দুর্নীতির এমন নির্লজ্জ বহিঃপ্রকাশ সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করছে। আমাদের জাতীয় অস্তিত্বও হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে দুর্নীতির কারণে। আমাদের নিশ্চুপ ও নীরব অবস্থান দুর্নীতিকে প্রতিনিয়ত প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতিবাজরা তাই সমাজকে কলুষিত করেই চলেছে।

দুর্নীতি দমনে নিচে উল্লিখিত পদক্ষেপগুলো জরুরি ভিত্তিতে গ্রহণ করা দরকর:-

১. দুর্নীতির সথে জড়িত সকল প্রাসঙ্গিক ইস্যু মূল্যায়ন এবং দুর্নীতির মূলোৎপাটনের জন্য দক্ষ, যোগ্য ও অভিজ্ঞ নাগরিকদের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে। টাস্কফোর্স দুর্নীতি দমনের একটি বিশদ কর্মসূচি সুপারিশ করবে।

২. দুর্নীতি দমনে রাজনৈতিক সদিচ্ছার বেশি প্রয়োজন। রাজনীতিবিদদের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা থাকতে হবে। তাদের সৎ ও আদর্শবান হতে হবে। দুর্নীতিবাজদের দল থেকে বের করতে হবে। সৎ ও যোগ্য প্রার্থীদের নির্বাচনে মনোনয়ন দিতে হবে। প্রশাসনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে।

৩. দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে দুর্নীতি হ্রাস পাবে। এর জন্য দরকার স্বাধীন বিচার বিভাগ। আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান এবং কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়- সমাজে এই বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত হলে, আইনের যথাযথ প্রয়োগ হলে দুর্নীতির পরিমাণ কমে যাবে।

৪. বেসরকারি, সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জন্য বাজারের সাথে সমন্বয় রেখে সুষম বেতন কাঠামো এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পারিশ্রমিক নির্ধারণ করতে হবে।

৫. দুর্নীতি রোধে স্বাধীন গণমাধ্যম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করতে পারে। দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের তথ্য অনুসন্ধান এবং তা জনসমক্ষে প্রকাশ করে গণমাধ্যম দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকার ভ‚মিকা রাখতে পারে।

৬. দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক ও নৈতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মানুষের মাঝে নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে। কেননা নৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধসম্পন্ন ব্যক্তি কখনো দুর্নীতির আশ্রয় নিতে পারে না। আর এসব দিক বিবেচনায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখতে পারে।

সকলের দৃঢ় অবস্থানই পারে বর্তমান দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে। দুর্নীতির চক্রকে ভাঙতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাই সকলকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।


বিনীত নিবেদক-
কাজী মামুনুর রশীদ

কামতা, ফেনী।

৬. বৃক্ষরোপণ অভিযান সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন রচনা করো। অথবা, বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব বর্ণনা করে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

সবুজের অভিযানে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাম্প্রতিক কুড়িগ্রাম জেলায় সরকারি উদ্যোগে উদ্যাপিত হলো বৃক্ষরোপণ অভিযান। জেলা প্রশাসকের তত্তবধানে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয়তাকে উপলব্ধি করানোর জন্য এ উদ্যোগ যথেষ্ট ফলপ্রসূ ভ‚মিকা রেখেছে।

মাননীয় এমপি মহোদয়ের হাতে বৃক্ষরোপণ অভিযানের সূচনা হয়। তিনি প্রথমে একটি নিমগাছের চারা রোপণ করেন। এরপর একে একে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একটি করে গাছের চারা রোপণ করেন। তাঁরা এলাকাবাসীকে বৃক্ষরোপণে উদ্বুদ্ধ করতে মূল্যবান বক্তব্য দেন।

একটি দেশের মূল ভ‚খণ্ডের শতকরা ২৫ ভাগ বনভ‚মি থাকা আবশ্যক। কিন্তু আমাদের দেশে বনভ‚মি আছে মাত্র ১৭ ভাগ। বনভ‚মির পরিমাণের এ স্বল্পতা আমাদের পরিবেশের জন্য বিরাট হুমকি। বৃক্ষরাজি নির্বিচারে ধ্বংস করার ফলে বাংলাদেশে নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হেনেছে। জলবায়ু ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে চরমভাবাপন্ন পরিণতির দিকে। তাই একটি বৃক্ষ কাটলে তার বদলে অন্তত পাঁচটি বৃক্ষ রোপণ করা উচিত।

‘ক’ জেলা প্রশাসন কর্মকর্তাদের গৃহীত এ বৃক্ষরোপণের এ উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয় ছিল। এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে তাঁদের বক্তব্য সবাইকে যথেষ্ট অনুপ্রাণিত করেছে বলে আমার বিশ্বাস। সবশেষে তাঁরা এলাকাবাসীর মাঝে বিনামূল্যে চারা বিতরণ করে আনুষ্ঠানিকতা সমাপ্ত করেন।

প্রতিবেদক
আজিজুল বাশার
চিলমারি, কুড়িগ্রাম
০৫/০৮/২০১৬


৭. তোমার স্কুলে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

১৬ই এপ্রিল, ২০২২
বরাবর
প্রধান শিক্ষক
রনছ রুহিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়
কাটাখালি, মুন্সীগঞ্জ।


বিষয় : পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন সম্পর্কে প্রতিবেদন।

জনাব,

সাম্প্রতিক রনছ রুহিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন সম্পর্কে আদেশপাপ্ত হয়ে নিম্নলিখিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করছি।

উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে পহেলা বৈশাখ উদ্যাপিত

পহেলা বৈশাখ বাঙালির কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যবহুল একটি দিন। প্রতিবছরেই এ দিনটি অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একযোগে পালন করে থাকে বাংলা নববর্ষ। পুরাতন বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে সাদরে বরণ করে নেওয়া হয় বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের মাধ্যমে। রনছ রুহিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রতিবছর নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের উদ্দেশ্যে। এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। নববর্ষের দিন সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণের উদ্যোগে ছাত্র-ছাত্রীরা নববর্ষের র‌্যালি নিয়ে বের হয়। এ র‌্যালিটি বিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকা প্রদক্ষিণ করে। এরপর র‌্যালি নিয়ে সবাই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয় এবং নববর্ষের ঐতিহ্যবাহী খাবার পান্তা-ইলিশ খায়। বিদ্যালয়ের সৌজন্যে এ ছাড়াও নানা মুখরোচক খাবারের আয়োজন করা হয়। এরপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর্ব শুরু হয়। যারা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবে তারা আগেই প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঞ্জুরুল ইসলাম। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন শ্রদ্ধেয় শিক্ষিকা পারভীন নাহার। তিনি প্রথমেই তাঁর সুন্দর বাচনভঙ্গি দিয়ে অনুষ্ঠানটির শুভ সূচনা করেন। এরপর বাংলা নববর্ষের সেই অমর সংগীত “এসো হে বৈশাখ, এসো এসো”- গানটি সমবেত কণ্ঠে পরিবেশন করে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা। নাচ, গান, অভিনয়, কৌতুক, আবৃত্তি সব মিলিয়ে দারুণ উপভোগ্য ছিল অনুষ্ঠানটি। প্রত্যেকের উপস্থাপনাই খুব সুন্দর ছিল। অনুষ্ঠান শেষ হয় দুপর ২টার দিকে। শিক্ষকদের সহায়তায় মাঠে নানা ধরনের স্টল সাজিয়েছিল বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। স্টলগুলোতে গ্রামীণ ঐতিহ্য ধারণকারী বৈচিত্র্যপূর্ণ পণ্য প্রদর্শিত হয়। প্রধান অতিথি ঘুরে ঘুরে স্টলগুলো দেখেন। সন্ধ্যা ছয়টায় দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি অভিভাবকগণও এই আয়োজনে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। সবার স্বতঃস্ফ‚র্ত অংশগ্রহণ উৎসবমুখর একটি পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সব মিলিয়ে অত্যন্ত আনন্দ ও উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে রনছ রুহিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলা নববর্ষ উদ্যাপিত হলো।

নিবেদক
সালমা খাতুন

বাণিজ্য বিভাগ
রোল নং-০৫।


৮. তোমার স্কুলে বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ উদ্যাপন সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন রচনা করো। 

১৬ই এপ্রিল, ২০১৬
বরাবর
প্রধান শিক্ষক,
গাছুয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়
মুলাদী, বরিশাল।

বিষয় : বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ সম্পর্কে প্রতিবেদন।

জনাব,

সম্প্রতিক গাছুয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ উদ্যাপন সম্পর্কে আদেশপাপ্ত হয়ে নিম্নলিখিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করছি।

বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ উদ্যাপিত

গাছুয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ উদ্যাপিত হয়েছে। সাত দিন ধরে চলে এ অনুষ্ঠান। এবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অংশ নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানের বিষয় ও সময়সূচি ছিল নিম্নরূপ :

তারিখ সময় বিষয়
০৪/০১/২০২২ --- ১০:০০ - ১২:০০টা --- রবীন্দ্রসংগীত
১২:০০ - ২:০০টা --- নজরুলসংগীত
০৫/০১/২০১৬ ১০:০০ - ১২:০০টা
১২:০০ - ২:০০টা নৃত্য

কবিতা আবৃত্তি
০৬/০১/২০১৬ ১০:০০ - ১২:০০টা
১২:০০ - ২:০০টা অভিনয়
উপস্থিত বক্তৃতা
০৭/০১/২০১৬ ১০:০০ - ১২:০০টা কৌতুক
দেশাত্মবোধক গান
০৮/০১/২০১৬ ১০:০০ - ১২:০০টা
১২:০০ - ২:০০টা চিত্রাঙ্কন
হাতের লেখা
০৯/০১/২০১৬ ১০:০০ - ১:০০টা অঙ্ক প্রতিযোগিতা
১০/০১/২০১৬ ১০:০০ - ১:০০টা গল্প লেখা প্র্রতিযোগিতা

সাত দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজনে শিক্ষার্থীরা স্ব স্ব ক্ষেত্রে নিজেদের পারদর্শিতা প্রদর্শন করে। শিক্ষার্থীদের প্রতিভা দেখে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অত্যন্ত উচ্ছ¡সিত হন। প্রতিটি শাখায় তিনজন করে সেরা প্রতিযোগীকে নির্বাচিত করা হয়। বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হলেও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আগামী মাসে উদ্যাপন করার ঘোষণা দেন প্রধান শিক্ষক। তিনি জানান, উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়। এ ঘোষণায় শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। সুশৃঙ্খলভাবে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ উদ্যাপন করে শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ এবং শিক্ষার্থীরা বেশ খুশি। সর্বোপরি প্রতিটি পর্বই ছিল বেশ উপভোগ্য। শিক্ষার্থীদের সাবলীল উপস্থাপনা সত্যিই বেশ প্রশংসনীয় ছিল।

প্রতিবেদক
শিমুল অধিকারী

নবম শ্রেণি
মানবিক বিভাগ।


৯. তোমার এলাকায় সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বইমেলা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

টাঙ্গাইলে বইমেলা অনুষ্ঠিত

টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ১লা ফেব্রæয়ারি থেকে সপ্তাহব্যাপী বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম। মেলায় ছোটবড় প্রায় ১০০টি স্টল ছিল। বাংলা একাডেমিসহ দেশের খ্যাতনামা বেশ কয়েকটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান এ মেলায় অংশ নেয়। ফলে দর্শক সমাগম হয় প্রচুর। বইয়ের ব্যাপারে বয়স্কদের তুলনায় তরুণদের আগ্রহই বেশি লক্ষ করা যায়। এতে প্রতিষ্ঠিত লেখকদের কবিতা, গল্প ও উপন্যাসের বই বেশি বিক্রি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস। দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে আল মাহমুদ ও শামসুর রাহমানের কাব্যগ্রন্থ। নতুন লেখকদের বইও কিছু কিছু বিক্রি হয়েছে। বইমেলাকে কেন্দ্র করে জেলার সাহিত্যমোদী মানুষের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়।

বইমেলার শেষদিনে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় শিল্পীদের কণ্ঠে মনোমুগ্ধকর দেশাত্মবোধক, লোক, রবীন্দ্র ও নজরুলসংগীত পরিবেশিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আশরাফ সিদ্দিকী। বিশেষ অতিথি ছিলেন টাঙ্গাইল শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক এম এ মুহিত, করটিয়া সাদত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান ড. কামালুদ্দীন চৌধুরী প্রমুখ। বক্তারা তাঁদের বক্তৃতায় বই পড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। জ্ঞানভিত্তিক আলোকিত সমাজ নির্মাণের আহ্বান জানান। শ্রেষ্ঠ স্টল হিসেবে পুরস্কৃত হয় ঐতিহ্য প্রকাশনী। স্টলের সুন্দর ডেকোরেশনের জন্য পুরস্কৃত হয় পাঠশালা প্রকাশন। মেলাকে কেন্দ্র করে তরুণ শিক্ষার্থীদের আগ্রহ উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। অনুষ্ঠান ও মেলার শৃঙ্খলা রক্ষায় তারা ছিল খুবই তৎপর। অতিথিরা মেলার সুন্দর আয়োজনের ভ‚য়সী প্রশংসা করেন।

প্রতিবেদক 
আরেফিন চৌধুরী

মির্জাপুর, টাঙ্গাইল
১০/০২/২০২২



১০. এলাকার গ্রন্থাগারের দুরবস্থা তুলে ধরে একটি পত্রিকায় প্রকাশের জন্য একটি প্রতিবেদন লেখো।  

খুলনা বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের বেহাল দশা

নিজস্ব প্রতিবেদক : খুলনা বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার ভবনটি সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ ও এর ভেতরে স্যাঁতসেঁতে হয়ে পড়েছে। ফলে এ গ্রন্থাগারের দুষ্প্রাপ্য ও মূল্যবান বইগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গ্রন্থাগার সূত্র জানায়, ১৯৬৪ সালে একটি দোতলা ভবনে গ্রন্থাগারটির কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিএল কলেজ, খুলনা মহিলা কলেজ, আযম খান সরকারি কমার্স কলেজ, এমএম সিটি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নিয়মিত গ্রন্থাগারটিতে আসছেন। গ্রন্থাগারটির আওতায় দশটি জেলা সরকারি গ্রন্থাগারের প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বর্তমানে অবকাঠামো এবং জনবল সংকটসহ নানা সমস্যার শিকার গ্রন্থাগারটি। এখানে ১৮ জনের জনবল কাঠামো রয়েছে। কিন্তু কর্মরত আছেন ১৪ জন। লাইব্রেরিয়ানের একটি পদ, রিডিং হল সহকারীর একটি পদ এবং নৈশপ্রহরী ও মালীর একটি করে পদ শূন্য রয়েছে। একটিমাত্র ফটোস্ট্যাট মেশিন, সেটিও অকেজো পড়ে রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে ভবনটির মেঝে ও দেয়ালগুলো স্যাঁতসেঁতে দেখা গেছে। গ্রন্থাগারের মধ্যে রাখা বইগুলোর অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। ধুলা জমে রয়েছে বইগুলোর ওপর। অধিকাংশ চেয়ার-টেবিল ফাঁকা পড়ে থাকতে দেখা যায়। দোতলায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে নতুন বইয়ের স্ত‚প। কিন্তু ক্যাটালগ তৈরি না হওয়ায় সব বই পাঠকের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি। কয়েকজন কর্মচারী নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, গ্রন্থাগারের মূল সমস্যা জনবল সংকট। ক্যাটালগারের পদ না থাকায় নতুন যে বইগুলো আসে, সেগুলো পাঠকদের জন্য সহজে উন্মুক্ত করা সম্ভব হয় না। একাধিক পাঠকের সাথে কথা বললে তাঁরা আক্ষেপ প্রকাশ করেন। তাঁদের অভিযোগ, আমাদের পক্ষে সব বই কিনে পড়া সম্ভব নয়। তাই এখানে আসি। কিন্তু বই পড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ যেমন নেই, তেমনি নেই প্রয়োজনীয় অনেক বই। অবিলম্বে গ্রন্থাগারটির সংস্কার দাবি করেন তাঁরা। বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের উপপরিচালক রেজাউল করীম বলেন, প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে কাজ করতে খুব সমস্যা হয়। আমরা প্রতি মাসের রিপোর্টের সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এসব সমস্যার কথা জানাই। কিন্তু কোনো কাজ হয় না। প্রতিবছর গ্রন্থাগারের সংস্কারকাজের জন্য যে পরিমাণ টাকা বরাদ্দ করা হয়, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। গণপূর্ত অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে নতুন করে ভবন তৈরি করার জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিতে।

বহু বছর ধরে খুলনা শহরবাসীর জ্ঞান তৃষ্ণা মিটিয়ে আসছে খুলনা বিভাগীর গণগ্রন্থাগারটি। কিন্তু প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে এটির এখন নাজুক অবস্থা। শীঘ্রই এর দিকে নজর না দিলে জ্ঞানার্জনের এ তীর্থস্থানটি সম্পূর্ণরূপে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।

প্রতিবেদক
সমীর বড়ুয়া

খুলশী, খুলনা



১১. কবি নজরুলের জন্মবার্ষিকী উদযাপনের ওপর একটি প্রতিবেদন লেখো।

ত্রিশালে নজরুল জয়ন্তী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা

ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সোমবার কবির  কৈশোরের স্মৃতিবিজড়িত ত্রিশালের দরিরামপুর নজরুল মঞ্চে কবির ১১৪তম জন্মবার্ষিকীর বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। ত্রিশাল ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন শিল্পীগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাটক পরিবেশন করে। ত্রিশাল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের তত্ত্বাবাধানে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এছাড়া নজরুল একাডেমি মাঠে নজরুল বইমেলার আয়োজন করা হয়। এতে ছিল সব শ্রেণির মানুষের উপচেপড়া ভিড়।

আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মুস্তাকিম বিল­াহ ফারুকী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে নজরুল স্মারক বক্তব্য প্রদান করেন নজরুল বিশেষজ্ঞ ড. হায়াৎ মামুদ। আলোচনায় অংশ নেন কবি আসাদ চৌধুরী এবং নজরুল গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী পরিচালক জনাব মো. আনিসুর রহমান। অতিথিগণ নজরুলের শিল্প-সাহিত্যের গতিপথ ও চমৎকারিত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। নজরুলের রচনাসম্ভার কীভাবে বাংলা সাহিত্যিকে সমৃদ্ধ করেছে সেটিও তুলে ধরেন বক্তারা। আলোচনা সভার শেষে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা নজরুলের কবিতা ও সংগীত পরিবেশন করে।

নজরুল বইমেলাকে ঘিরে স্থানীয় জনগণের বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপন লক্ষ করা গেছে। বইয়ের ক্রেতাও ছিল প্রচুর। নজরুলের কাব্যগ্রন্থগুলো ক্রয়ের প্রতিই বেশি আগ্রহ ছিল মানুষের।

প্রতিবেদক
মো. হাসানুজ্জামান খান

ময়মনসিংহ জিলা স্কুল, ময়মনসিংহ
২৬-০৫-২০২২


১২. বিজয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

উত্তর : বিজয় দিবসের আনন্দ-উৎসবে মেতে উঠেছিল জাতি

বিজয় দিবসে বাংলাদেশ এবার যেন মেতে উঠেছিল মহাউৎসবে। রাত বারোটা বাজার সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশে আতশবাজি ফুটিয়ে, কামান দাগিয়ে, হুইসেল বাজিয়ে বরণ করা হয় বিজয় দিবসকে। পাড়ায় পাড়ায় মাইকে বেজে ওঠে মুক্তিযুদ্ধের গান।

১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে সারা দেশে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সরকারি-বেসরকারি সংস্থা নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। পরিবেশিত হয় আবৃত্তি, দেশাত্মবোধক গান, পথনাটকসহ মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামের দিনগুলো নিয়ে নানা আলেখ্য ও বর্ণনামূলক অনুষ্ঠান। বেতার ও টেলিভিশনে প্রচারিত হয় মুক্তিযুদ্ধের গান, নাটক ও কবিতা। ঢাকা শহরে নেমেছিল জনতার ঢল। কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, রমনার বটমূল, টিএসসি, বাংলা একাডেমি, শিশু একাডেমি ও আশপাশের এলাকা সব বয়সী মানুষের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে।

১৫ই ডিসেম্বর রাত ১২টা ১ মিনিটে টিএসসিতে আতশবাজি পুড়িয়ে আর ৪৪টি ফানুস উড়িয়ে বিজয় দিবসকে স্বাগত জানানো হয়। তারপর কিছুক্ষণ চলে মনোমুগ্ধকর লেজার লাইট শো। এর পরপরই শুরু হয় দেশাত্মবোধক গান আর আবৃত্তি অনুষ্ঠান। পুরো এলাকা মেতে ওঠে বিজয় উৎসবে।

এবার বিজয় দিবস উপলক্ষে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট অনেকগুলো মঞ্চ তৈরি করে। দেশের কৃতী সন্তানদের নামে নামকরণ করা হয় সেসব মঞ্চ। যেমন নরেন বিশ্বাস আবৃত্তি মঞ্চ, শওকত ওসমান নাট্যমঞ্চ ইত্যাদি। এসব মঞ্চে এক যোগে প্রচারিত হয় সংগীতানুষ্ঠান, আবৃত্তি, চরমপত্র পাঠ, কবিকণ্ঠে কবিতা, বাউল গান ইত্যাদি।

বিজয় দিবসের ভোরবেলা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপ্রতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবর্গ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে একাত্তরের শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তারপর দলে দলে বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ মানুষ সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

বিকেল থেকে উৎসব হয়ে ওঠে আরও উৎসাহ ও আনন্দমুখর। সন্ধ্যার পর মনোরম আলোকমালায় সেজে ওঠে ঢাকা নগরী। মানুষজন মনের আনন্দে শহরজুড়ে ঘুরে বেড়ায়। বিজয়ের উৎসবে স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে সাড়া দেয় গোটা জাতি।

প্রতিবেদক
আশরাফ হোসেন

রামপুরা, ঢাকা
১৭/১২/২০২২



১৩. দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণ ও তার প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন তৈরি করো। অথবা, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে পত্রিকায় প্রকাশের জন্য একটি প্রতিবেদন লেখো।

দফায় দফায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি : জনগণের নাভিশ্বাস

স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীসহ সমগ্র দেশজুড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর প্রতিনিয়ত মূল্যবৃদ্ধি ঘটেই চলছে। এ যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। সরকার, প্রশাসন কারোরই এদিকে খেয়াল নেই। সাধারণ জনগণ নির্দিষ্ট ব্যবসায়ী শ্রেণির হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য কেজিতে পাঁচ থেকে পনেরো টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। কাঁচাবাজারে সবজির পর্যাপ্ত জোগান থাকা সত্ত্বত্তে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। শীত শেষে সবজির দাম ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। করলা ৪৫-৫৫ টাকা, ঢেড়শ ৬০-৭০, লাউ ৩০-৪০, আলু ২৫-৩০, বরবটি ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। উৎপাদক পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি দ্রব্যই কৃষকের বিক্রীত মূল্যের ৪/৫ গুণ অধিক মূল্যে ভোক্তাসাধারণ ক্রয় করছে। এ ব্যাপারে খুচরা বিক্রেতাদের সাথে কথা বললে তাঁরা জানান, তাঁদের চড়া দামে পাইকারদের কাছ থেকে পণ্য কিনতে হচ্ছে। পাইকাররা দাম বৃদ্ধির জন্য সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিজনিত পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধভাবে চাঁদা আদায়, যানজটের কারণে দ্রুত পচনশীল সবজি নষ্ট হওয়া ইত্যাদিকে দায়ী করেন।

মুদি-মনোহারি দ্রব্যের দোকানে গিয়ে দেখা যায় তেল, আটা, ময়দা ইত্যাদির দাম প্রতি কেজিতে এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে পনেরো হতে বিশ টাকা পর্যন্ত। সয়াবিন তেল ১১০-১২০ টাকা, চিনি ৫০-৬০, মসুর ডাল ১২০-১৩০, আটা ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা চালের দাম কিছুটা কমলেও বেড়েছে চিকন চালের দাম। গুড়, গুঁড়োদুধ ও শিশুখাদ্যের দাম গত এক মাসের ব্যবধানে গড়ে ১০ শতাংশ বেড়েছে। ডিম, মুরগি, মাছের দামও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। মুদি-মনোহারি দ্রব্যসামগ্রীর দাম বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীরা সরকারের যথাযথ তদারকির অভাব, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাজারে ঊর্ধ্বগতি, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ইত্যাদি কারণ উল্লেখ করেন।

কয়েকজন ক্রেতার সাথে কথা বলে দেখা যায়, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে অসন্তোষ বেড়েছে। একজন ভ্যানচালক ক্ষোভের সঙ্গে জানান তার সারা দিনের আয়ে পরিবারের জন্য দুবেলা দু’মুঠো ভাতের জোগাড় হচ্ছে না। ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়াচ্ছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে টিসিবি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে সরাসরি দায়ী করেন। টিসিবির পরিচালক জানান, দ্রুত টিসিবির মাধ্যমে তেল, চিনি, ডাল প্রভৃতি ভোগ্যপণ্য আমদানি করে রাজধানীসহ সকল বিভাগীয় শহরে ন্যায্যমূল্যে বিক্রয়ের মাধ্যমে বাজার ব্যবস্থা স্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে সরকার। এছাড়া আসন্ন ধান-চাল সংগ্রহের মৌসুমে স্থানীয় কৃষকদের নিকট হতে ধান সংগ্রহের মাধ্যমে খাদ্য মজুদ বৃদ্ধিতে সরকার চেষ্টা করছে বলে জানান। তিনি আরও বলেন, সরকার শীঘ্রই বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা পুনরায় চালু করবে।

এ অবস্থায় সরকারকে জনগণের পাশে দাঁড়াতে হবে। পরিবহন চাঁদাবাজি বন্ধ, বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা চালু, জেলা শহরগুলোতে ন্যায্যমূল্যে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমানো, অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, বাজারে পণ্য সরবরাহ বৃদ্ধি ইত্যাদি পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সরকার জনগণকে বর্তমান অবস্থা থেকে কিছুটা মুক্তি দিতে পারে। এ সমস্যা সমাধানে সরকার, ব্যবসায়ী, জনগণসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন ও আন্তরিক হতে হবে।



১৪. ‘যানজট একটি ভয়াবহ সমস্যা’Ñ এই শিরোনামে পত্রিকায় প্রকাশের জন্য একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

ভয়াবহ যানজট জীবনের স্বাভাবিক গতিকে স্তব্ধ করে দিচ্ছে

যানজটের কারণে ঢাকা শহরে স্বাভাবিক ও স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যানজট শুধু আমাদের অমূল্য সময়ই কেড়ে নিচ্ছে না, নাগরিক জীবনেও ডেকে আনছে নানা দুর্ভোগ। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, শ্রমিক, পথচারী সবাই আজ সর্বগ্রাসী যানজটের শিকার। এখন নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর কোনো নিশ্চয়তা নেই।

যানজটের কারণে গতি থমকে থাকলেও সময় থমকে থাকে না। কর্মস্থলে সময়মতো পৌঁছতে না পারার কারণে কাজের কাজ কিছুই হয় না। দশ মিনিটের রাস্তা পেরোতে লাগে এক ঘণ্টা। সকাল-বিকাল-সন্ধ্যা, যখন-তখন, যেখানে-সেখানে যানজট। রাজপত, গলিপথ, ফুটপাত কোথাও স্বস্তি নেই। সর্বত্র ভিড় আর ভিড়, গাড়ির ভিড়, মানুষের ভিড়। যানজটের ভিড়ে একবার আটকে গেলে কখন তা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে তা বলা মুশকিল। রোগীসহ অ্যাম্বুলেন্স যখন যানজটে আটকিয়ে পড়ে তখন ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, এমনকি পথিমধ্যে যানজটের কারণে রোগীর মৃত্যুও ঘটে। বর্তমানে নাগরিকের অপরিসীম ক্ষতি, ক্ষোভ ও বিরক্তির একটা বড় কারণ এ যানজট। এতে প্রতিদিন হারিয়ে যাচ্ছে অগণিত শ্রমঘণ্টা। এর অর্থমূল্য নির্ণয় করা গেলে দেখা যেত প্রতিদিন কী বিশাল অঙ্কের অর্থের অপচয় হচ্ছে যানজটের কারণে। যানজট মোকাবিলা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থা সুশৃঙ্খল করার জন্য বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। কিন্তু এতেও সমস্যার তেমন কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না।

সীমিত রাস্তাঘাটের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যাধিক্যই যানজটের প্রধান কারণ। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, অপরিকল্পিত ও ভারসাম্যহীন নগরায়ন, যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ নানা কারণে যানজট ও রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দেশের সড়ক ব্যবস্থাপনা অর্থাৎ সড়কগুলোর কার্যকর পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাব রয়েছে। আবাসন সংকট ও নগরায়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাস্তাঘাটের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও উন্নয়ন হচ্ছে না। অপরিকল্পিতভাবে ওয়াসা, ডেসা, গ্যাস, টেলিফোন, টেলিগ্রাফ ও বেসরকারি সংস্থা বিজ্ঞাপন বিলবোর্ডসহ নানা কারণে প্রায়ই জনবহুল রাস্তাসহ আবাসিক রাস্তাতেও খোঁড়াখুঁড়ি করে। খোঁড়াখুঁড়ির পর পুনরায় রাস্তা মেরামত হয় না সময়মতো। রাস্তায় ওভারব্রিজের স্বল্পতা, ট্রাফিক আইন না মানা এবং রাস্তা পারাপারে নিয়ম মেনে না চলা, আধাপাকা ও কাঁচা রাস্তায় অতিরিক্ত মাল ও যাত্রীবোঝাই যানবাহন চলাচল করা, যত্রতত্র গাড়ি পার্ক করা ইত্যাদির কারণে যানজট বেড়েই চলেছে। জনসাধারণের যাতায়াতের জন্য ২৫% ফুটপাত থাকার কথা, কিন্তু তা নেই। আবার যেটুকু আছে তার অধিকাংশ স্থান কলকারখানা, হোটেল, রেস্তোরাঁ ও ফেরিওয়ালাদের দখলে। রাস্তার অনেকাংশে যত্রতত্র বাসস্ট্যান্ড, ট্রাকস্ট্যান্ড ও টেম্পোস্ট্যান্ড দখল করে রেখেছে। এসব কারণে রাস্তা সংকীর্ণ ও অরক্ষিত হয়ে পড়ছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।


যানজট কমানোর জন্য কতকগুলো পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যেমন:-

১। অবৈধ রিকশার দৌরাত্ম্য কমানো হবে; ২। যত্রতত্র গড়ে ওঠা বাজার, মার্কেট, বিপণিবিতান উচ্ছেদ করা; ৩। যত্রতত্র যানবাহন থামিয়ে লোক ওঠা-নামা না করা; ৪। অবৈধ পার্কিং বন্ধ করা; ৫। ফুটপাতগুলোকে হকারমুক্ত করা; ৬। বেশিরভাগ রাস্তাকে ওয়ানওয়ে করা ও ক্রসিং কমিয়ে দেওয়া; ৭। রাজধানীতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির প্রতিযোগিতা বন্ধ করা; ৮। শহরের ব্যস্ত এলাকায় বাস টার্মিনাল উঠিয়ে দেওয়া; ৯। রাজধানীর অভ্যন্তরে শিল্প-কারখানাগুলোকে শহরের বাইরে নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট স্থানে স্থাপন করা; ১০। শহর থেকে কিছু হাসপাতাল, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস-আদালত শহরের বাইরে নিয়ে যাওয়া; ১১। নির্মাণাধীন ফ্লাইওভার ও মেট্রোরেলের কাজ দ্রæত শেষ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সর্বোপরি যানজট নিরসনের অন্যতম কৌশল হিসেবে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে হবে।

নাগরিক জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্য, সাবলীল ও গতিশীল করে তুলতে যানজট সমস্যার সমাধান অবশ্যই করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন সকলের সদিচ্ছা ও সময়োপযোগী সুন্দর বিজ্ঞানসম্মত পরিকল্পনা ও তার দ্রুত বাস্তবায়ন।

প্রতিবেদক
কামরুল ইসলাম

মগবাজার, ঢাকা
০৭/০৫/২০২২


১৫. তোমার দেখা একটি সড়ক দুর্ঘটনা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন লেখো।

করটিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত

টাঙ্গাইল সংবাদদাতা: গতকাল শুক্রবার ভোরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের করটিয়ায় মুখোমুখি দুটি বাস দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়।

শুক্রবার সকালে বগুড়া থেকে ছেড়ে আসা এস.আর. ট্র্যাভেলস (বগুড়া ক-২৯২৪) বাসটির সঙ্গে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা অপর একটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ বাঁধে। এতে এস.আর. ট্র্যাভেলস বাসের ৬ জন যাত্রী ও অন্য বাসটির ৪ জন যাত্রী নিহত হয়। আহত যাত্রীদের প্রথমে স্থানীয় করটিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং পরে কিছুসংখ্যক যাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। মুমূর্ষু ১২ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

নিহতদের মাঝে এখন পর্যন্ত চারজনের পরিচয় জানা গেছে। এরা হচ্ছে ১। আবদুর রহিম তালুকদার (গ্রাম : বেরের বাড়ি, উপজেলা : ধুনট, জেলা : বগুড়া) ২। কলিম খান (গ্রাম : সোনাতলা, উপজেলা : সোনাতলা, জেলা-বগুড়া) ৩। মরিয়ম বিবি (মালতিনগর, বগুড়া শহর) ৪। বশির মিয়া (২৭, আর.কে মিশন রোড, ঢাকা)। হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, আহত যাত্রীদের জন্য জরুরি রক্তের প্রয়োজন। আগ্রহী রক্তদাতাগণকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে রক্ত দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুর্ঘটনার ফলে উভয় দিকের যানচলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। দুই ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ঐ দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি। তবে আহত একজন যাত্রী জানিয়েছে বগুড়া থেকে আসা বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারালে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে।

পুলিশ কর্মকর্তাগণ দুর্ঘটনার স্থানটি পরিদর্শন করেছেন। দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত করা হবে বলে জানান এক কর্মকর্তা। পুলিশ এস.আর. ট্র্যাভেলস বাসটির হেলপারকে আটক করেছে।

প্রতিবেদক
হাবিবুর রহমান
করটিয়া, টাঙ্গাইল
১৮/০৪/২০২২


১৬. নগর উন্নয়ন বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

উত্তর : একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজন দ্রুবত নগর উন্নয়ন

বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সমাজজীবন মূলত কৃষিভিত্তিক। তবে দেশের সার্বিক উন্নয়নের মূল কেন্দ্রবিন্দু নগরগুলোই। গ্রামগুলোকেও তাদের সমস্ত কর্মকাণ্ডের সুফল লাভের জন্য নির্ভর করতে হয় নগরগুলোর ওপর। বর্তমান বিশ্বসভ্যতা প্রধানত নগরভিত্তিক। তাই নগর উন্নয়ন ও নাগরিকসেবার প্রতি বিশেষভাবে মনোযোগী না হয়ে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সম্ভব নয়। 

ভারসাম্যহীন নগরায়ন

বাংলাদেশের নগরায়নে ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ সুস্পষ্ট। কারণ স্বাধীন-উত্তর সময়ে নগরায়ন ঘটেছে অত্যন্ত দ্রæত হারে। ১৯৭১ সালে দেশের নগর জনসংখ্যা ছিল ৫ মিলিয়ন আর ২০১০ সালে নগর জনসংখ্যা প্রায় ৫০ মিলিয়ন। প্রতি ১২ বছরে নগরের জনসংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নগর উন্নয়ন ঘটেনি। বরং পরিকল্পনার অভাবে বা এর দুর্বলতার কারণে অথবা সুচিন্তিতভাবে উন্নয়ন বিনিয়োগ ব্যবস্থা না হওয়ায় দেশে ভারসাম্যহীন নগরায়ন ঘটছে। ফলে আমরা দেখি ঢাকা শহরে মাত্রাতিরিক্ত বিনিয়োগ আর ঢাকার বাইরে গুটিকয়েক বড় শহরের নগর উন্নয়ন।

নগরভিত্তিক সমস্যা

নগরভিত্তিক সমস্যাসমূহ মেগাসিটি ঢাকা থেকে শুরু করে যেকোনো ছোট শহর পর্যন্ত দৃশ্যমান। প্রতিটি সমস্যার সমাধান প্রচেষ্টাই এক একটি চ্যালেঞ্জ। এসব সমস্যার মধ্যে রয়েছে : 

* আইনশৃঙ্খলা সমস্যা।

* বিভিন্ন সরকারি সেবা-পরিসেবার অপ্রতুলতা।

* পরিবহন অপর্যাপ্ততা ও ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে সৃষ্টি হয়েছে পরিবহন ও যানজট সমস্যা, সড়ক দুর্ঘটনা ইত্যাদি।

* শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিনোদনসেবার অপ্রতুলতা এবং বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা।

* আবাসন সংকট।

* পরিবেশ দূষণ।

* প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত সমস্যা ও অগ্নিকাণ্ড।

* সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের সমস্যা।

* বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা, বিশেষ করে নারী ও শিশু নির্যাতন ইত্যাদি।

সমস্যা সমাধানের কৌশল

* নগর উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রয়োজন একটি জাতীয় নগরায়ন নীতিমালা প্রপ্রণ। যার মূল লক্ষ্য হবে নগর-দারিদ্র্য দূরীকরণ ও নগর-দরিদ্রদের জীবন মান উন্নতকরণ।

* রাজধানী ঢাকা, বন্দরনগরী চট্টগ্রাম অভিমুখী জনস্রোত হ্রাস করার ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য। এজন্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুযোগ-সুবিধাসহ প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ নীতি গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন জরুরি। এক্ষেত্রে জেলা শহর, মাঝারি শহর, উপজেলা শহর, এমনকি ছোট শহরেও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। ব্যাপক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা প্রয়োজন।

* প্রয়োজন দক্ষতার সঙ্গে নগর পরিচালনা করা। নগর পরিচালনা বলতে বোঝায় একটি নগরের সামগ্রিক উন্নয়ন ও বিদ্যমান সমস্যাবলির সমাধানের জন্য সুচিন্তিত ও সুসমন্বিত ব্যবস্থাপনা। নগর পরিচালনার প্রধান দায়িত্ব স্থানীয় পৌর সরকারের (পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশন) ওপর বর্তায়। বর্তমানে সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাসমূহের উন্নয়ন ও কর্মসূচি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে যথেষ্ট স্বচ্ছতা নেই। এছাড়াও রয়েছে অনেক আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। নগর উন্নয়ন ও নাগরিক সেবার মান উন্নত করার লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এবং দক্ষতার সঙ্গে সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে।

প্রতিবেদক
ইসরাত জাহান

ছোটরা, কুমিল্লা
১১/০২/২০২২


১৭. খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মেশানো ও তার প্রতিকার সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মেশানো ও তার প্রতিকার

‘খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল’ বিষয়টি মানুষের জন্য এক আতঙ্কের নাম। প্রায় প্রতিদিনই এ নিয়ে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় বিভিন্ন সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে। মাছ, মাংস, চিনি, লবণ, চাল, আটা, দুধ, ঘি, মিষ্টি, ওষুধ ভেজাল সর্বত্রই। এমনকি মিনারেল ওয়াটার নামে বোতলবন্দি ‘বিশুদ্ধ’ পানিতেও ভেজাল। উদ্বেগের বিষয় হলো- হচ্ছে এসব নকল ও ভেজাল খাদ্যসামগ্রীই বিশুদ্ধ বা খাঁটি লেবেল লাগিয়ে অনায়াসে বিক্রি হচ্ছে।

ভেজালের বর্তমান চিত্র

বর্তমানে দেশে ভেজালের দৌরাত্ম্যের কথা আমরা সবাই কমবেশি জানি। কিন্তু ভয়ের কথা হলো ভেজালের আওতার মধ্যে প্রতিনিয়তই নিত্যনতুন দ্রব্য যুক্ত হচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়ত বাজার থেকে কিনে যেসব খাদ্যদ্রব্য খেয়ে থাকি, এদের মধ্যে কত শতাংশ ভেজাল তা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। তবে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের এক সূত্র থেকে জানা যায়, রাজধানীতে বিক্রিত খাদ্যসামগ্রীর শতকরা সত্তর ভাগ ভেজালযুক্ত। অন্যদিকে ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ-এর সূত্র মতে, দেশের পঞ্চাশ শতাংশ খাদ্যদ্রব্যই ভেজাল মিশ্রিত করে বিক্রি করা হয়। ভেজাল দেওয়ার প্রক্রিয়ায় খাদ্যশস্যে বহির্জাত পদার্থ সরাসরি যোগ করা হয়, যেমন : ওজন বৃদ্ধির জন্য বালি বা কাঁকর, ভালো শস্যের সঙ্গে কীটপতঙ্গ আক্রান্ত বা বিনষ্ট শস্য মেশানো ইত্যাদি। অনেক সময় মজুদ খাদ্যশস্যের ওজন বাড়ানোর জন্য কেউ কেউ তাতে পানি ছিটায়। ঘিয়ের সঙ্গে পশুচর্বি দিয়ে ভেজাল করা হয়। তিল বা নারিকেল তেলের সঙ্গে বাদাম তেল বা তুলাবীজের তেল মেশানো হয়। সয়াবিন তেলের সঙ্গে পামতেলের ভেজাল করা হয়। অনেক সময় দুধে পানি মিশিয়ে ভেজাল দুধ বাজারজাত করা হয়। বিভিন্ন ফলের রসের নামে কৃত্রিম ও নিষিদ্ধ দ্রব্য ব্যবহার করে নকল রস তৈরি হয়ে থাকে। বর্তমানে মিনারেল ওয়াটার নামে বাজারে যে পানির ব্যবসা চলছে তাতে গুণ ও মানের নিশ্চয়তা অতি সামান্য বা অনেক ক্ষেত্রে নেই বললেই চলে।

ভেজাল মেশানোর কারণ

খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মেশানোর প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের লোভ। নৈতিক শিক্ষা ও মূল্যবোধের অভাবে ব্যবসায়ীরা লোভে পড়ে নানা রকম দুর্নীতি ও অসৎ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। ভোগবাদী প্রবণতা এবং রাতারাতি ধনী হওয়ার প্রবণতা থেকেও খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মিশিয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা করছে। প্রশাসনিক নিয়মকানুনের দুর্বলতার কারণে এবং কঠিন দণ্ডবিধি বা শক্ত কোনো আইন কার্যকর না থাকায় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী নিন্দনীয় এ কাজটির সঙ্গে অবলীলায় জড়িয়ে পড়ছে।

খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল রোধের উপায়

দেশের সংবিধানের ১৮ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে : ‘জনগণের পুষ্টির স্তর উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন রাষ্ট্রের অন্যতম প্রাথমিক কর্তব্য বলিয়া গণ্য করিবে।’ বাজার যেখানে ভেজাল ও নিম্নমানের খাদ্যদ্রব্যে পূর্ণ সেখানে জনগণের ‘পুষ্টির স্তর উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন’ করতে হলেও রাষ্ট্রকে অবশ্যই সর্বাগ্রে ভেজাল ও নিম্নমানের খাদ্যদ্রব্য এবং এসবের জোগানদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। জনগণকেও এ ব্যাপারে সচেতন করে তুলতে হবে। খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মেশানো ও তার প্রতিকার সম্পর্কে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো নেওয়া যেতে পারে-

বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ নামে একটি আইন করা হয়েছে। আইনটির যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত হবে। খাদ্যনমুনা পরীক্ষা করার জন্য প্রত্যেক জেলায় এবং সম্ভব হলে বড় বড় বাজারগুলোতে পরীক্ষাগার স্থাপন করতে হবে। বিএসটিআইকে দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে। ভেজালবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং বাজার তদারকির জন্য ব্যবস্থা রাখতে হবে। পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ এবং পণ্যের প্যাকেটের গায়ে কোম্পানির লাইসেন্স নম্বর, ট্রেড মার্ক, পণ্যের উৎপাদন সময়সহ এমন সব কৌশল ও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যাতে ক্রেতাসাধারণ সহজেই খাদ্যদ্রব্যের ভেজাল বুঝতে পারে। ভেজালের প্রতিকারের লক্ষ্যে ক্রেতাস্বার্থ আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার। প্রচারমাধ্যমে খাদ্যদ্রব্যে ভেজালের নানা রকম প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে। সমাজে ভেজালকারীকে চিহ্নিত করে সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। ব্যবসায়ীদের খাদ্যদ্রব্যে ভেজালের ভয়াবহ দিক সম্পর্কে জানিয়ে তাদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে।

আশা করা যায়, উল্লিখিত পদক্ষেপসমূহের আলোকে সরকারের সদিচ্ছা এবং আইন প্রয়োগকারীদের সততা অটুট থাকলে খাদ্যদ্রব্যে ভেজালের পরিমাণ কমবে।

প্রতিবেদক
নিগার সুলতানা

সাত্তারখান, চট্টগ্রাম।


১৮. যুব সমাজের অবক্ষয়ের চিত্র তুলে ধরে পত্রিকায় প্রকাশের উপযোগী একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

উত্তর : ধ্বংসের মুখে জাতির ভবিষ্যৎ কাণ্ডারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : যারা বয়সে নবীন, যাদের আত্মবিশ্বাস রয়েছে অগাধ, যারা অন্যায়ের কাছে মাথা নোয়ায় না, যারা পুরাতনকে ভেঙে নতুন কিছু গড়তে চায় তারাই যুবক। তারা স্থবির নয়, তারা চঞ্চল। তারা পরাজয় মানতে নারাজ। তারা দেশ ও জাতির গৌরব। এ তরুণরাই যদি বিপরীতমুখী রূপ ধারণ করে অন্যায়ের দিকে পা বাড়ায় তাহলে জাতি অনিবার্য ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যায়। যুবসমাজের এ অবস্থাকেই বলা হয় অবক্ষয়। আমাদের যুবসমাজ নানা অবক্ষয়ের শিকার। বেকারত্ব, সন্ত্রাস, রাজনৈতিক কুপ্রভাব, অপসংস্কৃতি, অর্থনৈতিক দৈন্য ইত্যাদি যুবসমাজকে দারুণভাবে প্রভাবিত করছে। ফলে তারা সুস্থ জীবন থেকে আলাদা হয়ে ঝুঁকে পড়ছে অবক্ষয়ের গহীন আবর্তে। অবক্ষয়ের কারণগুলো নিম্নরূপ :

জীবনের আদর্শ ও মূল্যবোধের অভাব : আমাদের যুবসমাজের সামনে জীবন্ত আদর্শের একান্ত অভাব। বড়দের মাঝে তারা আদর্শবান ব্যক্তিত্ব খুব কমই খুঁজে পাচ্ছে যাদের কাছ থেকে তারা সৎ পথের অনুপ্রেরণা পাবে। বরং দেখতে পাচ্ছে রাজনীতির নামে মিথ্যাচার, সমাজসেবার নামে স্বেচ্ছাচার, আদর্শের নামে প্রতারণা। মূলত সর্বত্র আজ যে মূল্যবোধের অভাব দেখা দিয়েছে, তার দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে বর্তমান যুবসমাজ।

অপসংস্কৃতির প্রভাব :  যুবসমাজের ওপর সিনেমা, টিভি, বিভিন্ন প্রকার সংবাদপত্র, এসবের কুপ্রভাব অত্যন্ত বেশি। অধিকাংশ সিনেমার কাহিনি, নাচ-গান, পোশাক-পরিচ্ছদ ইত্যাদি এমনভাবে সন্নিবেশিত যে তাতে যুবকেরা অতি সস্তায় ও সহজে আমোদ-প্রমোদের উপকরণ খুঁজে পায়। তারা অনেক সময় এসব উদ্ভট ও অবাস্তব কাহিনিকে বাস্তব জীবন বলে চালিয়ে দিতে গিয়ে মারাত্মক ভুল করে বসে। অপসংস্কৃতি গ্রাস করছে যুবসমাজকে। বর্তমানে খুন, রাহাজানি, ছিনতাই, ধর্ষণ এসব কার্যকলাপের মূলে রয়েছে অপসংস্কৃতির প্রভাব। 

মাদকদ্রব্যের ভূমিকা : কোনো দেশের যুবস¤প্রদায় মাদকাসক্ত হওয়ার কারণ হচ্ছে সে দেশের নৈতিক চরিত্রের অনিবার্য অধঃপতন। গাঁজা, ভাং, আফিম, হেরোইন, প্যাথেড্রিন, কোকেন, হাসিস, মারিজুয়ানা ইত্যাদি নানা ক্ষতিকর মাদকদ্রব্য আজ সর্বত্র সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীরা এর অবাধ ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেদের ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

রাজনৈতিক দলের প্রভাব : রাজনৈতিক দলের অসৎ নেতারা নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিল করার মানসে যুবসমাজকে অনেক সময় কুপথে পরিচালিত করে। মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে যুবকদের ক্ষমতা ও অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। ক্যাডার তৈরি করে নানা অপকর্মে লিপ্ত করে। যার পরিণাম যুবসমাজের অধঃপতন। 

বেকারত্ব : বেকারত্ব যুবসমাজের বিপথগামিতার অন্যতম প্রধান কারণ। লেখাপড়া শেষে যখন তারা কোনো কাজ পায় না, তখন অসৎ উপায়ে উপার্জনের জন্য রাস্তায় নামে। চুরি, ডাকাতি, খুন, রাহাজানি, ছিনতাই, অপহরণ ইত্যাদি অপরাধমূলক কাজ করতেও দ্বিধাবোধ করে না। এভাবে বেকার যুবসমাজ জীবন সম্পর্কে হতাশায় ভোগে এবং নানা অপরাধে লিপ্ত হয়।

শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস : শিক্ষায় অব্যবস্থার নানা অসঙ্গতিও যুবকদের অনেক সময় বিপথগামী করে। ভর্তি সমস্যা, পুস্তক সমস্যা, আবাসিক সমস্যা, খাদ্য সমস্যা, ফল প্রকাশে অহেতুক বিলম্ব, যখন তখন ধর্মঘট, দলবাজি এসব ঘটনা তো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাধারণ খুবই ব্যাপার। তরুণদের মানসিকতা নষ্ট করে দেয়। গুটিকয়েক সন্ত্রাসী সমগ্র ছাত্রসমাজকে জিম্মি করে রেখেছে। আর এর শিকার হচ্ছে আমাদের গোটা যুবসমাজ।

তরুণরাই জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের বিপথগামিতা অবশ্যই রোধ করতে হবে। যুবসমাজকে সুপথে ফিরিয়ে আনা, আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনের ভার সচেতন মহলের সবাইকে নিতে হবে। প্রচার মাধ্যমগুলো; বিশেষ করে টিভি, সিনেমা, পত্র-পত্রিকাগুলোকে গঠনমূলক ভ‚মিকা পালন করতে হবে। যুবসমাজের জন্য খেলাধুলা ও শরীর চর্চার ব্যবস্থা নিতে হবে। বেকারত্ব দূর করতে হবে। শিক্ষাঙ্গনকে সন্ত্রাসমুক্ত করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সব প্রকার মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।

প্রতিবেদক
কামরুল হাসান 

হবিগঞ্জ, সিলেট। 


১৯. তোমার বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিতব্য বিজ্ঞান মেলার ওপর ভিত্তি করে একটি প্রতিবেদন প্রণয়ন করো।

১২/০৩/২০২২
বরাবর
প্রধান শিক্ষক
টিকাটুলি মডেল হাই স্কুল
টিকাটুলি, ঢাকা।

বিষয় : বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান মেলার আয়োজন সম্পর্কে প্রতিবেদন।

জনাব, 

আপনার দ্বারা আদিষ্ট হয়ে টিকাটুলি মডেল হাই স্কুলে অনুষ্ঠিতব্য বিজ্ঞান মেলার আয়োজন সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন আপনার সদয় অবগতির জন্য নিচে উপস্থাপন করা হলো।

বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় চলছে বিজ্ঞান মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি প্রতি বছরের মতো এবারও টিকাটুলি মডেল হাই স্কুলে আয়োজিত হতে যাচ্ছে দিনব্যাপী বিজ্ঞান মেলা। এবার এ মেলার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে মার্চ মাসের ২০ তারিখ। মোট ২৩টি স্কুল এ মেলায় অংশ নিতে যাচ্ছে। এগুলোর মধ্যে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও ঢাকার বাইরের কয়েকটি নামকরা স্কুলও রয়েছে। আয়োজনটিকে সর্বাঙ্গীণভাবে সফল করে তোলার জন্য ছাত্র ও শিক্ষকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান হিসেবে রয়েছেন আইসিটি বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষক মাহফুজুর রহমান স্যার। গত সোমবার কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে স্কুলের অডিটোরিয়ামে একটি মত বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকবৃন্দ নানা বিষয়ে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। আয়োজনটি সফল করার ব্যাপারে কার কী ভ‚মিকা থাকবে তা-ও সভায় নির্ধারণ করা হয়। 

এদিকে স্কুলের পক্ষ থেকে এ মেলায় অংশ নিতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের মাঝে লক্ষ করা গিয়েছে বেশ উৎসাহ। সবাই নিজ নিজ প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। গত বছরের মতো এবারও প্রথম পুরস্কারটি জিতে নিতে তারা বদ্ধ পরিকর। শিক্ষকগণ তাদের কর্মকাণ্ডে আন্তরিকভাবে সহায়তা করছেন। 

মেলার দিন বিদ্যালয় ভবন ও প্রাঙ্গণটিকে বর্ণিল সাজে সাজানো হবে। অংশগ্রহণকারী বিচারকগণ ও আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য থাকবে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা। তাছাড়া মেলার প্রারম্ভে ছোট পরিসরে একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেরও আয়োজন থাকবে। এই সবকিছুর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ও জনবলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবারের বিজ্ঞান মেলার আয়োজন খুব সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে।

প্রতিবেদক
জিনিয়া সুলতানা

নবম শ্রেণি, বিজ্ঞান শাখা
রোল নং-১


২০. মাদকাসক্তি যুবসমাজের অবক্ষয়ের অন্যতম একটি প্রধান কারণ, এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশের উপযোগী একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

নিজস্ব প্রতিবেদক : উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও মাদকদ্রব্যের ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের তরুণ সমাজের একটি বিরাট অংশ ভয়াবহ মাদকাসক্তির শিকার। বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য ব্যবহারের পরিমাণ ও ব্যবহারকারীর সংখ্যা সম্পর্কে সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণামতে এ দেশের ১৭ ভাগ লোক মাদকাসক্ত। এ দেশে অবৈধভাবে প্রচুর পরিমাণে মাদক বিক্রি হয় এবং মাদকদ্রব্যের এই সহজলভ্যতাই আমাদের দেশে দিন দিন মাদকগ্রহণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি করছে।

মাদকাসক্ত ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় জীবনে ভয়াবহ পরিণাম ডেকে আনে। কখনো খারাপ লোকের প্ররোচনা, হতাশা, নৈরাশ্য অথবা নিছক কৌত‚হলবশত কেউ একবার মাদক গ্রহণ শুরু করলে সে আর এই নেশা থেকে ফিরে আসতে পারে না। দিনের পর দিন তার এ নেশা আরো বাড়তে থাকে। অনেকেই ভাবে মাদক গ্রহণের মাধ্যমে তারা দুঃখকে ভুলে থাকার শক্তি পায়। কিন্তু এ ধারণা সম্পূর্ণ অমূলক। মাদক মানুষের মানসিক সুস্থতাকে নষ্ট করে তাকে মানসিকভাবে আরো দুর্বল করে তোলে। মাদক গ্রহণের ফলে মানুষের আচরণেও অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি অত্যন্ত সহজেই অনৈতিক ও বেআইনি কাজে জড়িয়ে পড়ে। মাদকের টাকা জোগাড় করার জন্য পরিবারে অশান্তির সৃষ্টি করে, চুরি, ডাকাতি ইত্যাদি অসৎ পথ অবলম্বন করে। মাদকাসক্তরা পরিবার এবং সমাজে ভীতি ও আতঙ্কের সৃষ্টি করে। মাদকদ্রব্য ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন জটিল ও দুরারোগ্য রোগব্যাধি দেহকে আচ্ছন্ন করতে থাকে। ব্যক্তিত্বের অবসান ঘটে ও কর্মক্ষমতা লোপ পায়।

মাদকাসক্তির সর্বনাশা ছোবল দেশের তরুণ সমাজকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। একটি সুস্থ ও সুন্দর সমাজের জন্য মাদকাসক্তি নির্মূল করতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন ব্যক্তিগত ও সামাজিক সচেতনতা ও দৃঢ় প্রতিরোধ ব্যবস্থা। তবেই আমরা পেতে পারি একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ।

প্রতিবেদক
আরেফিন

চরফ্যাশন, ভোলা।
WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now