Table of Contents
প্রশ্ন: রাত্রে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাসনুন ইবাদত বা আমল
উত্তর: ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থার নাম। একজন মুসলমানের জন্য ভোরে ঘুম হতে জাগ্রত হওয়া থেকে রাত্রে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত ইসলামী অনুশাসন মেনে দিবারাত্র যাপন করা অত্যন্ত সৌভাগ্যের বিষয়। রাতে শয়ন পূর্ব ও শয়নকালে বিভিন্ন বরকতময় ও ফজিলতপূর্ণ দু’আ রয়েছে। আর ইসলাম দু’আকে স্বতন্ত্র ইবাদতের মর্যাদা দিয়েছে। দোয়া বিপর্যন্ত হৃদয়ের আশ্রয়স্থল ও আশা-আকাক্সক্ষার প্রতীক। রাতে বিছানায় শয়নকালে বিশেষ কিছু মাসনুন দোয়া রয়েছে। শয়নকালে দোয়া পাঠ করা সুন্নাতে নববী। হাদীসে বর্ণিত রয়েছে- হযরত হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম যখন নিদ্রা যাওয়ার ইচ্ছা করতেন তখন পাঠ করতেন ‘‘বিইস্মিকা আল্লা-হুম্মা আমু-তু ওয়া আহ্য়া।’’ [বুখারী শরীফ, আদাবুল মুফরদ- হাদীস নং ৫৯৫৩] অপর হাদীসে উল্লেখ রয়েছে- বিশিষ্ট সাহাবী হযরত জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ‘‘আলিফ লাম মীম তানযীল ও তাবারাকাল্লাযী বি-ইয়দিহিল মুল্ক ( তথা সূরা মুলক) না পড়া পর্যন্ত শয়ন করতেন না।
[আল্ আদাবুল মুফরাদ: হাদীস নং ১২২৪] সাহাবী হযরত আবু যুবায়র রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বলেন, উক্ত দুই সূরা ক্বোরআন শরীফের অন্যান্য সূরার তুলনায় সত্তর (৭০)গুণ বেশি ফজিলতময়। যে ব্যক্তি উক্ত দুইটি সূরা তিলাওয়াত করবে, তার জন্য সত্তরটি দরজা বুলন্দ হয় এবং এই সূরার দ্বারা তার সত্তর (৭০)টি গুনাহ্ ক্ষমা করা হয়। [আল্ আদাবুল মুফরাদ] প্রখ্যাত সাহাবী হযরত বারা ইবনে আযেব রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যখন তোমরা শয়ন করতে যাও, তখন নামাযের ন্যায় অযু করো। অতঃপর নীচের দু’আটি পড়বে। রাসূল করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম শয়নের সময় প্রায় পড়তেন-
এছাড়াও হাদীসে পাকে ঘুমানোর পূর্বে বেশ কয়েকটি সুন্নাতের কথা উল্লেখ রয়েছে যথা ক. ভালোভাবে বিছানা ঝেড়ে নেয়া, খ. ঘরের দরজা আল্লাহর নামে বন্ধ করা, গ. ঘুমানোর দু’আ পাঠ করা, ঘ. পুরুষেরা ডান কাত হয়ে শোয়া, ঙ. স্ত্রী সহবাস করলে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে লজ্জাস্থান ধুয়ে ওযু করে নেয়া, চ. সতর খোলা বা উলঙ্গ অবস্থায় না শোয়া, ছ. বিনা কারণে উপুড় হয়ে না শোয়া, জ. ঘুমানোর সময় বাতি বন্ধ করা, ঝ. দুঃস্বপ্ন দেখলে পার্শ্ব পরিবর্তন করা এবং দুঃস্বপ্ন দেখলে প্রথমে বাম দিকে তিনবার থু থু ছিটা ইত্যাদি। (এ সমস্ত আমল সমূহ সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফে এবং সুনানে তিরমিযি শরীফের বিভিন্ন অধ্যায়ে উল্লেখ রয়েছে)। সুতরাং যতটুকু সম্ভব উপরোক্ত বিষয়াদির উপর আমল করার চেষ্টা করবে। এর মধ্যে অনেক ফজিলত ও বরকত নিহিত আছে। এ সমস্ত নেক আমল বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার বিরাট সহায়ক ও ওসিলা।