Table of Contents
আরবি প্রবন্ধ-রচনা : কুরআন শিক্ষা | كتابة المقال - تَعْلِيمُ الْقُرْآنِ | শিক্ষক নিবন্ধনের আরবি সহকারী/প্রভাষক লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি সহায়ক প্রয়োজনীয় প্রশ্নোত্তর ও তথ্য সম্বলিত
كتابة المقال - تَعْلِيمُ الْقُرْآنِ
الْإِجَابَةُ :
الْإِفْتِتَاحِيَّةُ : الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي هَدَانَا بِالْقُرْآنِ الْكَرِيمِ إِلَى الصِّرَاطِ الْمُسْتَقِيمِ، كَمَا قَالَ تَعَالَى : ذَلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ فِيْهِ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ، وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلَى النَّبِيِّ الْأُمِّيِّ الَّذِي بُعِثَ بِجَوَامِعِ الْكَلِيمِ ومنابع الْحِكَمِ وَعَلَى آلِهِ وَأَصْحَابِهِ أَجْمَعِينَ.
تَعْرِيفُ الْقُرْآنِ : هُوَ كِتَابُ اللهِ الْمُنَزَّلِ عَلَى الرَّسُوْلِ عَلَيْهِ الصَّلَاةُ والسَّلَامُ الْمَكْتُوبُ فِي الْمَصَاحِفِ الْمَنْقُوْلُ عَنْهُ نَقْلًا مُتَوَاتِرًا بِلَا شُبْهَةٍ وَكَانَتْ بِدَايَةً نُزُولِهِ مِنْ غَارِ حِرَاءٍ بِآيَةِ : اِقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ.
آيَاتُ الْقُرْآنِ وَسُوْرَتُهُ وَمُدَّةُ نُزُولِهِ : الْقُرْآنُ هُوَ كِتَابٌ أَنْزَلَهُ اللهُ إِلَى مُحَمَّدٍ بِوَاسِطَةِ جِبْرَائِيلَ عَلَيْهِ السَّلامُ لِهِدَايَةِ الْبَشَرِ، وَمُدَّةُ نُزُولِه ثَلَاثَةٌ وَعِشْرُونَ عَامًا مِنْ ٦١٠ إِلَى ٦٣٣ الْمِبْلَادِيَّةِ وَعَدَدُ سُوْرَيْهِ : ١١٤، وَعَدَدُ آيَاتِهِ : ٦٢٣٦ وَعَدَدُ أَجْزَائِهِ ثَلَاثُونَ.
كَيْفِيَّةُ نُزُوْلِ الْقُرْآنِ : نَزَلَ الْقُرْآنُ مِنَ اللَّوْحِ الْمَحْفُوظ إِلَى سَمَاءِ الدُّنْيَا دَفْعَةٌ وَّاحِدَةً ثُمَّ نَزَلَ عَلَى نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ عَلَى قَدْرِ حَوَائِجِ الْبَشَرِ نَجْمًا نَجْمًا وَأَيَةٌ أَيَةً فِي ثَلَاثَةٍ وَعِشْرِينَ عَامًا أَحْيَانًا جَاءَ جِبْرَائِيلُ بِصُورَتِهِ الْأَصْلِيَّةِ وَأَحْيَانًا يَأْتِي بِصُورَةِ الْبَشَرِ.
تَارِيخُ جَمْعِ الْقُرْآنِ : كَانَ الْقُرْآنُ فِي عَصْرِ الرَّسُوْلِ مَحْفُوظًا فِي الْعُسْفِ وَاللَّحَافِ، ثُمَّ جَمَعَهُ أَوَّلًا أَمِيرُ الْمُؤْمِنِينَ أَبُو بَكْرِ الصِّدِّيقِ اللهِ ثُمَّ جَمَعَهُ ذُو التَّوْرَيْنِ أمِيرُ الْمُؤْمِنِينَ عُثْمَانُ هُ وَكَتَبَهُ عَلَى لُغَةِ - قُرَيْشٍ وَزَيَّنَهُ بِالنُّقْطَةِ وَالْحَرَكَةِ حَجَّاجُ بْنُ يُوسُفَ.
الْقُرْآنُ مُعْجِزَةٌ لِلرَّسُوْلِ : إِنَّ اللَّهَ أَعْطَى كُلَّ نَبِيَّ مُعْجِزَاتٍ لِلتَّحَدِّى مَعَ الْمُخَالِفِينَ وَالْقُرْآنُ هُوَ أَكْبَرُ : الْمُعْجِزَاتِ لِرَسُولِ اللَّهِ ﷺ حَيْثُ لَمْ يَقْدِرْ عَلَى مُقَابَلَتِهِ أَحَدٌ مِّنْ بُلَغَاءِ الْعَرَبِ كَمَا نَطَقَ بِهِ الْقُرْآنُ وَإِنْ ألـكُنْتُمْ فِي رَيْبٍ مِّمَّا نَزَّلْنَا عَلَى عَبْدِنَا فَأْتُوا بِسُورَةٍ مِّنْ مِثْلِهِ.
أَغْرَاضُ نُزُولِ الْقُرْآنِ : أَغْرَاضُ نُزُولِ الْقُرْآنِ كَثِيرَةٌ، فَمِنْهَا :
١. إِخْرَاجُ النَّاسِ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النَُوْرِ كَمَا قَالَ تَعَالَى : كِتَابٌ أَنْزَلْنَاهُ إِلَيْكَ لِتُخْرِجَ النَّاسَ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلى النَُوْرِ.
٢. هُدًى لِّلنَّاسِ، كَمَا قَالَ اللهَ تَعَالَى : ذَلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ فِيْهِ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ، وَلَا قَامَةِ الْإِخْوَةِ وَالْعَدْلِ وَالْأَمَانَةِ وَالسَّلَامَةِ وَالدَّوْلَةِ الْإِسْلَامِيَّةِ وَالْأَحْكَامِ الْإِلَهِيَّةِ وَغَيْرِ ذَلِكَ مِنْ أَغْرَاضِ نُزُولِ الْقُرْآنِ.
أَهْلُ الْقُرْآنِ هُمْ أَهْلُ اللَّهِ : عَنْ أَنَسِ هُ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ : إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى أَهْلِيْنَ مِنَ النَّاسِ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ هُمْ؟ قَالَ : هُمْ أَهْلُ الْقُرْآنِ أَهْلُ اللَّهِ وَخَاصَّتَهُ (البخاري)
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ الْبَاهِي هُ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُولُ : اِقْرَؤُوا الْقُرْآنَ فَإِنَّه يَأْتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ شَفِيعًا لِأَصْحَابِهِ (مُسْلِمٌ)
وَاجِبْنَا إِلَى الْقُرْآنِ : يَجِبُ عَلَيْنَا أَنْ نَقْرَأُ الْقُرْآنَ وَنَفْهَمَهُ وَأَنْ نَتَعَلَّمَهُ وَنَعْلَمَهُ وَتُجَاهِدَ لِإِقَامَةِ نِظَامِهِ وَتَعْمَلَ بِأَحْكَامِهِ وَأَنْ نَحْفَظَهُ وَنَحْتَرِمَهُ وَنُعَلِّمَ أَبْنَانَنَا وَصِبْيَانَنَا فِي طُفُوْلِيَتِهِمِ الْقُرْآنَ الْكَرِيمَ.
النَّهَايَةُ : لَا بُدَّ عَلَيْنَا أَنْ تَعْمَلَ بِالْقُرْآنِ الْكَرِيمِ؛ لِأَنَّ الْعَمَلَ بِهِ هُوَ الْغَايَةُ الْكُبْرَى مِنْ إِنْزَالِهِ لِقَوْلِ سبحانه : كِتَابٌ أَنْزَلْنَاهُ إِلَيْكَ مُبَارَكٌ لِيَتَدَبَّرُوا آيَاتِهِ وَلْيَتَذَكَّرَ أُولُوا الْأَلْبَابِ.
আরবি প্রবন্ধ-রচনা : কুরআন শিক্ষা
উত্তর:
ভূমিকা: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্যে, যিনি কুরআনের মাধ্যমে আমাদেরকে সহজ-সরল পথের দিকে হেদায়াত দান করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, "এটা এমন এক কিতাব, যাতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। পরহেযগারদের জন্যে পথ-প্রদর্শনকারী। আর সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক উম্মি নবীর ওপর যিনি প্রেরিত হয়েছেন ব্যাপকার্থময় বাণী ও বিজ্ঞানের উৎসমূল নিয়ে। আরো বর্ষিত হোক তাঁর পরিবারবর্গ এবং সকল সাহাবির ওপর।
কুরআন পরিচিতি: কুরআন হলো আল্লাহর এমন এক কিতাব যা রাসূল (স)-এর ওপর অবতারিত, গ্রন্থকারে লিপিবদ্ধ এবং রাসূল (স) থেকে ধারাবাহিকভাবে মুতাওয়াতির পন্থায় বর্ণিত হয়েছে। আর এর অবতরণের সূচনা হয় হেরা গুহায় إقرأُ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ আয়াতের মাধ্যমে। কুরআন আয়াত, সূরা ও অবতীর্ণ হওয়ার সময় কুরআন এমন একটি কিতাব যা আল্লাহ তায়ালা মানব জাতির হেদায়াতের জন্যে জিবরাইল (আ)-এর মাধ্যমে হযরত মুহাম্মদ (স)-এর ওপর নাযিল করেছেন। এর অবতরণের সময়কাল ২৩ বছর। ৬১০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ৬৩৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। এর সূরা সংখ্যা ১১৪টি, আয়াত সংখ্যা ৬২৩৬ ও পারা সংখ্যা ৩০টি।
কুরআন নাযিল পদ্ধতি: কুরআন লাওহে মাহফুজ থেকে পৃথিবীর নিকটবর্তী আসমানে একই সাথে অবতীর্ণ হয়েছে। সেখান থেকে আমাদের নবী (স)-এর ওপর তেইশ বছরে মানুষের প্রয়োজন অনুপাতে কিছু কিছু ও আয়াত আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। মাঝে মাঝে জিবরাইল (আ) তাঁর নিজস্ব আকৃতিতে আসতেন। আবার মাঝে মাঝে মানুষের আকৃতিতেও আসতেন।
কুরআন সংকলনের ইতিহাস: রাসূলে কারিম (স)-এর যুগে কুরআন গাছের ডাল ও বাকলে সংরক্ষিত ছিল। এরপর আমিরুল মুমিনিন হযরত আবু বকর (রা) সর্বপ্রথম সংকলন করেন। তারপর যিনুরাইন আমিরুল মুমিনিন হযরত ওসমান (রা) একে সংকলন করেন এবং এটাকে কুরাইশি ভাষায় লিপিবদ্ধ করেন। এতে হরকত এবং নুকতা সংযোজন করেন হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ।
কুরআন রাসূল (স)-এর মু'জেযা: আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক নবীকেই তার বিরোধীদের চ্যালেঞ্জ করার জন্যে বহু মুজেযা দান করেছেন। আর কুরআন হলো, রাসূল (স)-এর সর্ববৃহৎ মুজেযা। সে কারণেই আরবের কোনো কবি, সাহিত্যিক এর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্ষম হয় নি। কুরআনের ভাষায়, আমি আমার বান্দাহর প্রতি যা অবতীর্ণ করেছি তাতে তোমরা সন্দিহান হলে, অনুরূপ একটি সূরা এনে দেখাও।
কুরআন নাযিলের উদ্দেশ্য: কুরআন নাযিলের বহু উদ্দেশ্য রয়েছে। যথা-
১. মানুষকে অন্ধকার হতে আলোর পথে নিয়ে আসা। যেমন আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- "আমি আপনার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যাতে আপনি মানুষকে অন্ধকার হতে আলোর পথে নিয়ে আসেন"।
২. মানব জাতির জন্যে পথনির্দেশ। যেমন আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- এ কিতাবে কোনো সন্দেহ নেই। এটা আল্লাহভীরুদের জন্যে পথপ্রদর্শক। তাছাড়া ভ্রাতৃত্ব, ন্যায়বিচার, আমানতদারিতা, শান্তি প্রতিষ্ঠা, ইসলামি সম্রাজ্য ও ঐশী বিধান ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করাও কুরআন নাযিলের উদ্দেশ্য।
কুরআনের ধারকগণ আল্লাহর আহাল: হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা) হতে বর্ণিত। রাসূল (স) ইরশাদ করেন, মানুষের মাঝে আল্লাহর কতেক আহাল রয়েছে। সাহাবায়ে কেরাম বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ তারা কারা? রাসূল (স) বললেন, তারা হলো কুরআনের ধারক, আল্লাহর নৈকট্যশীল ও বিশেষ মর্যাদাপ্রাপ্ত।-বুখারি
আবু উমামা বাহেলি (রা) বলেন, তোমরা কুরআন পড়, কেননা, কুরআন তার তেলাওয়াতকারীর জন্যে সুপারিশ করবে। (মুসলিম)
কুরআনের প্রতি আমাদের কর্তব্য: আমাদের ওপর আবশ্যক হলো আমরা কুরআন পড়বো ও বুঝবো। কুরআন শিখবো ও শেখাবো। কুরআনি বিধান প্রতিষ্ঠার জন্যে প্রচেষ্টা করবো, কুরআনের বিধান মুতাবেক আমল করবো, কুরআনকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করবো, সম্মান করবো এবং আমাদের সন্তান ও শিশুদেরকে কুরআন শিক্ষা দান করবো।
উপসংহার: আমাদের ওপর আবশ্যক হলো কুরআনুল কারিম অনুযায়ী আমল করা। কেননা, কুরআন অনুযায়ী আমল করাই হলো, কুরআন অবতীর্ণ করার মূল লক্ষ্য। আল্লাহর ভাষায় এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুভব করে।