ভাব-সম্প্রসারণ : বাংলা ২য় পত্র - নবম ও দশম শ্রেণি, এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা (৩য় পর্ব)

ভাব-সম্প্রসারণ : বাংলা ২য় পত্র - নবম ও দশম শ্রেণি, এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা (৩য় পর্ব)
Join Telegram for More Books
Table of Contents

 ভাব-সম্প্রসারণ : বাংলা ২য় পত্র - নবম ও দশম শ্রেণি, এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা (৩য় পর্ব)

ভাব-সম্প্রসারণ : বাংলা ২য় পত্র - নবম ও দশম শ্রেণি, এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা (৩য় পর্ব)

কবি-সাহিত্যিকদের লেখায় কখনো কোনো একটি বাক্যে বা কবিতার এক বা একাধিক চরণে গভীর কোনো ভাব নিহিত থাকে। সেই ভাবকে বিস্তারিতভাবে লেখা, বিশ্লেষণ করাকে ভাব-সম্প্রসারণ বলে। যে ভাবটি কবিতার চরণে বা বাক্যে প্রচ্ছন্নভাবে থাকে, তাকে নানাভাবে ব্যাখ্যা করতে হয়। সাধারণত সমাজ বা মানবজীবনের মহৎ কোনো আদর্শ বা বৈশিষ্ট্য, নীতি-নৈতিকতা, প্রেরণামূলক কোনো বিষয় যে পাঠে বা বাক্যে বা চরণে থাকে, তার ভাব-সম্প্রসারণ করা হয়। ভাবসম্প্রসারিত ক্ষেত্রে রূপকের আড়ালে বা প্রতীকের ভেতর দিয়ে যে বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়, তাকে যুক্তি, উপমা, উদাহরণ ইত্যাদির সাহায্যে বিশ্লেষণ করতে হয়।

ভাব-সম্প্রসারণ করার ক্ষেত্রে যেসব দিক বিশেষভাবে খেয়াল রাখা প্রয়োজন : 

  • উদ্ধৃত অংশটুকু মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।
  • অন্তর্নিহিত ভাবটি বোঝার চেষ্টা করতে হবে।
  • অন্তর্নিহিত ভাবটি কোনো উপমা-রূপকের আড়ালে নিহিত আছে কি না, তা চিন্তা করতে হবে। 
  • সহজ-সরলভাবে মূল ভাবটিকে ফুটিয়ে তুলতে হবে।
  • মূল বক্তব্যকে প্রকাশরূপ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনে যুক্তি উপস্থাপন করতে হবে। 
  • বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • বক্তব্য সাধারণত বিশ থেকে পঁচিশ লাইনের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে। 

(toc)


রাত যত গভীর হয়, প্রভাত তত নিকটে আসে
অথবা, একের শেষান্তে অপরের আবির্ভাব।

মূলভাব : মানুষের জীবনে সুখ-দুঃখ পর্যায়ক্রমে আসে। সুখ বা দুঃখ কোনোটাই কারো জীবনে চিরস্থায়ী হয় না। চরম দুঃখ কষ্টের মাঝে যদি কেউ মনে করে তার জীবনের সুখ শান্তি খুবই নিকটবর্তী তবেই সে দুঃখ কষ্টকে জয় করতে পারে। 
সম্প্রসারিত ভাব : বিশ্ব-সংসারে সবকিছুই নিয়মের অধীন। এ ধরণীতে দিন-রাত হয় প্রকৃতির নিয়মে। স্রষ্টার এ এক অলঙ্ঘনীয় বিধান। রাতের ক্রমযাত্রা প্রভাতের নবোদিত সূর্যের দিকে। তবে এ প্রভাত সহজেই আসে না। একে আসতে হয় রাতের আঁধারকে ভেদ করে। রাত যখনই সময়ের অচলায়তন অতিক্রম করে সামনের দিকে এগিয়ে যায়, তখনই প্রভাতের অস্তিত্ব লক্ষ করা যায়। প্রভাত একান্তই রাতের গতিশীলতার ওপর নির্ভরশীল। অনুরূপভাবে মানবজীবনের বৈচিত্র্যময় জীবনধারার এটাই জীবনের আবর্তন। আজ যারা সুখে দিনাতিপাত করছে, তাদের সে সুখ একদিনে আসেনি। হাজারো চড়াই-উতরাই এর মাধ্যমে এসেছে। রাত এখানে দুঃখ-কষ্টের প্রতীক। প্রভাত সুখ-শান্তির প্রতীক। এই সুখ-শান্তি সহজেই পাওয়া যায় না। এজন্য মানুষকে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে হয়, পাড়ি দিতে হয় কষ্টের সমুদ্র। দুঃখ-কষ্টের প্রবহমান স্রোতই মানুষকে সুখ-সমৃদ্ধির দিকে ঠেলে দেয়। তাই বলা যায়, দুঃখ-কষ্ট যতই তীব্রতর হয়, সুখ-শান্তি ততই সহজে পাওয়া যায়।
মন্তব্য : দিবা-রাত্রির মতো মানুষের জীবনেও সুখ-দুঃখ চক্রাকারে আবর্তিত হচ্ছে এবং প্রাণপণ চেষ্টা করলে মানুষ সুখের নাগাল একদিন না একদিন অবশ্যই পাবে। যথার্থ প্রচেষ্টা থাকলে মানুষ সুখের আলোক দর্শন করবেই করবে। জীবনে মানুষ যে অবস্থারই মুখোমুখি হোক হতাশা যেন তার ওপর ভর না করে।

“আলো বলে, অন্ধকার, তুই বড় কালো
অন্ধকার বলে, ভাই তাই তুমি আলো।”

মূলভাব : আলো ও অন্ধকার পরস্পর বিপরীতধর্মী হলেও একে অপরের পরিপূরক। একটির অস্তিত্ব ও মূল্য নির্ভর করে অন্যটির ওপর। আমাদের জীবনে আলো এবং অন্ধকারের মতো সুখ-দুঃখের বিচিত্র সমাবেশ ঘটে। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটির অস্তিত্ব কল্পনা করা নিরর্থক।
সম্প্রসারিত ভাব : আমাদের এ সুন্দর পৃথিবী পরস্পরবিরোধী উপাদানসমূহের দ্বান্দ্বিক প্রক্রিয়া দ্বারা সতত সচল। জন্ম-মৃত্যু, সৃষ্টি-ধ্বংস, আলো-অন্ধকার, সুখ-দুঃখ এসবই পরস্পর বিপরীতধর্মী। কিন্তু এরা একে অপরের পরিপূরক। জন্মের পর মৃত্যু অবধারিত বলেই জীবন এত মূল্যবান। ধ্বংসের ভয় আছে বলেই মানুষ সৃষ্টিকে সংরক্ষণ করতে ভালোবাসে। পৃথিবীতে সুখের অস্তিত্ব আছে তাই মানুষ দুঃখকে হাসিমুখে বরণ করে। আর দুঃখের অস্তিত্ব আছে তাই সুখে বসবাস করার জন্য মানুষ আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। পৃথিবীতে আলো ও অন্ধকার কেউ কারও অস্তিত্বকে স্বীকার করতে পারে না। অন্ধকার ছাড়া আলো মূল্যহীন। আর আলো ছাড়া পৃথিবীও অচল। কেননা, আলো না থাকলে ঘোর অমানিশায় ডুবে যাবে এই স্বপ্নীল পৃথিবী। আলো ঝলমল উজ্জ্বল দিন ফুরিয়ে পৃথিবীতে নামে রাতের অন্ধকার। রাত এলেই আমরা অনুধাবন করি উজ্জ্বল সূর্যের গুরুত্ব। রাত ফুরালে ভোরের সূর্য যখন উঁকি দেয় পুবের আকাশে, তখন আমাদের মন নতুন আশায় ভরে ওঠে। আলো অন্ধকারকে যতই অবজ্ঞা করুক, অন্ধকার ছাড়া আলোর গৌরব এতটা উজ্জ্বলভাবে আমাদের কাছে কোনোদিন ধরা পড়ত না। মন্দ আছে বলেই তো ভালোর গুণ বিচার করা আমাদের পক্ষে সম্ভব।
মন্তব্য : প্রকৃতপক্ষে নিরবচ্ছিন্ন সমস্ত কিছুর অস্তিত্বই মূল্যহীন। দুই বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যের একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটির অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। পরস্পরবিরোধী বৈশিষ্ট্যের কারণেই জীবন ও প্রকৃতি হয়েছে কৌত‚হলোদ্দীপক ও আকর্ষণীয়।

আত্মশক্তি অর্জনই শিক্ষার উদ্দেশ্য।

মূলভাব : শিক্ষা মানুষের মানসিক শক্তি তৈরি করে। ভালো ও সৎকর্মের যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা অধিকারী হয় দৃঢ় মনোবলের। এ আত্মশক্তি বা দৃঢ় মনোবল অর্জনই শিক্ষার উদ্দেশ্য।
সম্প্রসারিত ভাব : মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করা শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য। এর বলেই মানুষ নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠে। কিন্তু যাদের মধ্যে এ আত্মশক্তি নেই তারা কখনও স্বনির্ভরশীল হতে পারে না। যাদের সারা জীবন পরনির্ভর থেকে অন্ধকার পরিবেশে জীবন কাটাতে হয়, তারা কখনও আলোর মুখ দেখতে পারে না। সবকিছুতেই যেন তাদের সংশয় কাজ করে। প্রকৃত শিক্ষা গ্রহণ না করায় তারা হয় অন্তঃসারশূন্য। শিক্ষার আলোক পেয়েছে যারা তাদের দৃষ্টি বহুদূরে প্রসারিত। তারা জীবনের সঠিক পথ দেখতে পায়। জীবনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য তাদের অন্য লোকের দ্বারস্থ হতে হয় না। তারা আত্মনির্ভরশীল হয়ে এগিয়ে চলে নিজের গতিতে। নিজের শক্তিকেই তারা সবচেয়ে বড় হাতিয়ার মনে করে। আর এ সবকিছুই সম্ভব প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছে আত্মশক্তি অর্জনের মাধ্যমে। কিন্তু এ আত্মশক্তি মানুষের মধ্যে সুপ্ত অবস্থায় বিরাজ করে। একে যথাসময়ে যথার্থরূপে আবিষ্কার করে নিতে হয়। যারা উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত; তারাই এ আত্মশক্তিকে সুপ্ত অবস্থা থেকে জাগ্রত অবস্থায় আনতে সমর্থ হয়।
মন্তব্য : শিক্ষা মানুষের জন্য জাদুর কাঠির মতো। এর স্পর্শে মানুষ মনুষ্যত্বলোকের স্বাদ পায়। নিজেকে ও আশপাশের পরিবেশকে চিনতে পেরে সে আত্মনির্ভর হয়ে ওঠে।


অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে
তব ঘৃণা তারে যেন তৃণসম দহে

মূলভাব : অন্যায়কারী এবং অন্যায় সহ্যকারী উভয়ই সমভাবে ঘৃণ্য। যারা আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বিশৃঙ্খল ও অরাজক পরিস্থিতি সমাজে তৈরি করে তারা সমাজের চোখে অপরাধী। আবার যারা এই অন্যায়কে মুখ বুজে সহ্য করে তারাও অপরাধী।
সম্প্রসারিত ভাব : মানুষ সামাজিক জীব। বিধাতা মানুষকে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন এবং সঙ্গে সঙ্গে আচরণবিধি ঠিক করে দিয়েছেন। এগুলোকে আমরা ধর্মীয় বিধি-নিষেধ বলি। আবার ব্যক্তি ও সমাজজীবনের বৃহত্তর কল্যাণে ও সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য মানুষ গড়ে তুলেছে অনেক মান্য অনুশাসন ও অনুসরণীয় নিয়ম-নীতি। কিন্তু সমাজজীবনে এমন কিছু লোক থাকে যারা এসব অনুশাসন ও নিয়মনীতি মান্য ও অনুসরণ করে না; তারা অন্যকে উৎপীড়ন করে, অন্যের অধিকারে অন্যায় হস্তক্ষেপ করে, উচ্ছৃঙ্খল আচরণে সমাজকে অস্থিতিশীল করে। সামাজিক শৃঙ্খলাকে উপেক্ষা করে সামাজিক স্বার্থবিরোধী অন্যায় ও অবৈধ কর্মতৎপরতায় লিপ্ত হয়। এরা সমাজের চোখে অন্যায়কারী ও আইনের চোখে অপরাধী বলে বিবেচিত হয়। এই অপরাধ বা অন্যায়ের বিরুদ্ধাচরণ যে করে না বরং তা মেনে নেয়, সূ² বিচারে সেও অপরাধী। কেননা অন্যায়ের বিচার বা প্রতিবিধান না হলে তার মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে মানুষের পক্ষে সমাজে বসবাস করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এই অবস্থার জন্য অন্যায় সহ্যকারীর দায়িত্বকে অস্বীকার করার উপায় নেই। অবশ্য অপরাধীকে ক্ষমা করার মহৎ গুণের কথাই এ প্রসঙ্গে উঠতে পারে, কিন্তু মনে রাখতে হবে ক্ষমারও নির্দিষ্ট মাত্রা ও সীমা থাকা দরকার। অন্যায় করে যদি কেউ অনবরত ক্ষমা পেতে থাকে, তাহলে দিন দিন তার অপরাধপ্রবণতা প্রবল হয়ে উঠবে। তার স্বেচ্ছাচারিতার মাত্রা ক্রমেই বেড়ে যাবে। দিন দিন বাড়বে তার শক্তি ও সাহস। শাসনযন্ত্রেও সে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হবে এবং শেষ পর্যন্ত দুর্বিনীত অন্যায়কারী সবার কাছ থেকে সমীহ পেতে ব্যস্ত হয়ে উঠবে। ফলে সমাজে বিশৃঙ্খল অবস্থা ও অস্থিরতা বিরাজ করবে।
মন্তব্য : অন্যায়কারী ও অন্যায়কে প্রশ্রয়দানকারী উভয়েই সমান অপরাধী। ক্ষমার দুর্বলতাকে সম্বল করে কেউ যেন অন্যায় কাজে প্রবৃত্ত হতে না পারে সে ব্যাপারে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। অন্যায়কারী এবং অন্যায় সহ্যকারী উভয়কেই আমরা ঘৃণার চোখে দেখব।


সেই ধন্য নরকুলে লোকে যারে নাহি ভুলে
মনের মন্দিরে নিত্য সেবে সর্বজন

মূলভাব : পৃথিবীতে মানুষ স্মরণীয় ও বরণীয় হয় তার মহৎ কর্মের মধ্য দিয়ে। মানুষের কল্যাণ সাধনায় যারা জীবন উৎসর্গ করেন তারা মানুষের সর্বাধিক প্রিয় হয়ে ওঠেন। তারা হয়ে ওঠেন আত্মার আত্মীয়। তাই তাদের কেউ ভুলতে পারে না। তারা পৃথিবীতে অমর হন।
সম্প্রসারিত ভাব : আমাদের সমাজে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেয় তার স্বীয় কীর্তিময় অবদান। কিন্তু অর্থবিত্ত দ্বারা সেই স্থান অর্জন সম্ভব নয়। তারাই মহাপুরুষ যাদের জীবন পবিত্র ও মহৎ কর্মে চির প্রাণবন্ত ও উচ্ছল। কোনো কোনো মানুষ শতাধিক বছর জীবিত থেকেও তাদের মতো ইতিহাসে পাতায় নাম লেখাতে পারে না। প্রকৃতপক্ষে, কর্ম মানুষকে মহৎ করে তোলে। এসব মহাপুরুষের জীবন ও সাধনাই স্মরণ মননের যোগ্য। কারণ তা বৃহত্তর মানবসমাজকে মুক্তি, মৈত্রী ও শান্তির পথ দেখাতে সাহায্য করে। অন্য দিকে, এসব প্রতিভাবানরা তাঁদের কর্মের মহিমায় বিশ্বজগৎকে সুশোভিত করেন। সুমহান কর্মের মাধ্যমে আনন্দ, সুখ ও সমৃদ্ধির বহু অজানা দিগন্ত উন্মোচিত করেন, দেখান মুক্তির পথ। মানুষমাত্রই মরণশীল। ক্ষণভঙ্গুর এ জীবনে সত্যের সন্ধানে হযরত মুহম্মদ (সা.), ঈসা (আ.), মুসা (আ.), চৈতন্যদেব প্রমুখ জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তারা কোনো নির্দিষ্ট স্থান ও কালের মানুষ ছিলেন না, ছিলেন সর্বযুগের ও সর্বকালের। তারা জগতে মহাপুরুষরূপে অগণিত মানুষের প্রীতি ও ভালোবাসা লাভ করেছেন। তাদের জন্যই যুদ্ধ-বিগ্রহসঙ্কুল এ পৃথিবী বসবাসের উপযোগী হয়েছে। তাঁদের মানবকল্যাণ কর্ম ও চিন্তা দ্বারা বিপথগামীরাও সুপথে পরিচালিত হয়। আর সভ্যতার ইতিহাসে তাঁরাই সৌভাগ্যবান পুরুষ হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকেন। এসব বীর্যবান পুরুষ শারীরিকভাবে মৃত্যুবরণ করলেও ইতিহাসের পাতায় অবিনশ্বর ও চির অহবান হয়ে আছেন। 
পরবর্তী বংশধরেরা সেই সব মহাপুরুষের নাম স্মরণ করে, মহৎ জীবনের স্বর্ণতোরণে উপস্থিত হয়।
মন্তব্য : কাজেই জীবনে মহৎ কিছু করতে হলে, যারা স্মরণীয় তাদের পথ অনুসরণ করে চলা উচিত। সকলের জন্য মনের মধ্যে মমত্ববোধ এবং প্রেমভাব জাগিয়ে তোলাই জীবনকে ধন্য করার উপায়।

বিশ্রাম কাজের অঙ্গ এক সাথে গাঁথা
নয়নের অংশ যেন নয়নের পাতা।

মূলভাব : পৃথিবীতে উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে মানুষের পরিশ্রম বা কাজের মধ্য দিয়ে। কিন্তু এই কঠিন পরিশ্রম মানুষ একটানা করতে পারে না। কাজ বা পরিশ্রমের পাশাপাশি বিশ্রাম গ্রহণ প্রয়োজন। একটি আরেকটির পরিপূরক।
সম্প্রসারিত ভাব : কাজ এবং বিশ্রাম অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। কাজ বা পরিশ্রমই সৌভাগ্যের প্রসূতি। পরিশ্রমের ফলেই জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি আসে। আর পরিশ্রমের শেষে বিশ্রাম ফিরিয়ে আনে উদ্যম ও শক্তি। বিশ্রাম সমস্ত ক্লান্তি ও অবসাদকে নাশ করে এবং দেহ ও মনকে কাজের জন্য নতুনভাবে সতেজ করে। পরিশ্রমের পর শ্রান্ত ও ক্লান্ত দেহে উদ্যম ফিরিয়ে আনার জন্য যেমন বিশ্রামের প্রয়োজন, তেমনি বিশ্রামের পরে দেহের কর্মস্পৃহাকে সচল ও সজীব রাখার জন্য নিয়মিত শ্রমেরও প্রয়োজন। দেহের জন্য একটানা পরিশ্রম যেমন ক্ষতিকর, তেমনি একটানা বিশ্রামও সুখকর নয়। একটানা বিশ্রাম জীবনকে অলস, অচল ও কর্মবিমুখ করে তোলে। পক্ষান্তরে, একটানা পরিশ্রমের ফলে দেহ-মনে ভর করে অবসাদ, এর ফলে লুপ্ত হয় দেহের কর্মক্ষমতা। চোখের পাতা যেমন চোখের জন্য অপরিহার্য অঙ্গ, তেমনি বিশ্রামও পরিশ্রমের জন্য অপরিহার্য। শুধু পরিশ্রমী ব্যক্তিই বিশ্রামের আনন্দ অনুভব করতে পারে। এ আনন্দ তার কাছে স্বর্গের সুধার মতো। যারা পরিশ্রম করে না তারা বিশ্রামের আনন্দও অনুভব করতে পারে না। সুতরাং বিশ্রাম ছাড়া কাজ এবং কাজ ছাড়া বিশ্রামের কোনো সার্থকতা নেই।
মন্তব্য : বিশ্রামকে তাই কাজের অঙ্গ বলা হয়েছে। একটি ছাড়া অন্যটি অর্থহীন; কেননা শুধু কাজ কিংবা শুধু বিশ্রাম কোনোটাই জীবনের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে না। তাই কাজের পাশাপাশি বিশ্রাম ও বিশ্রামের পাশাপাশি কাজ অপরিহার্য। এই অভ্যাসের মধ্য দিয়েই মানুষের জীবন সার্থকতার দিকে এগিয়ে যায়।
 

সংসার সাগরে দুঃখ তরঙ্গের খেলা
আশা তার একমাত্র ভেলা

মূলভাব : জীবন সংগ্রামে মানুষ আশায় বুক বাঁধে। আশায় ভর করেই মানুষ সম্মুখে এগিয়ে যায়। অথবা আশাই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। আশা বা প্রত্যাশাই তার স্বপ্ন। আশাই তার কর্মের প্রেরণা জোগায়। আশার ভেলায় চড়েই সে জীবনসমুদ্রে পাড়ি জমায়।
সম্প্রসারিত ভাব : মানুষের জীবনে চলার পথ কুসুমাস্তীর্ণ নয়। এখানে দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত নিত্য নতুন দুঃখ-দুর্দশার সাথে চিরন্তন সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হয়। মনীষীরা সংসারটাকে সীমাহীন সমুদ্রের সাথে তুলনা করেছেন, আর সেই সমুদ্রে নিরন্তর আছড়ে পড়ে দুঃখের তরঙ্গমালা। বাস্তবকে মেনে নিলে দুঃখের অমানিশা কেটে একদিন সুখের সোনালি সকাল জীবনে আসবেই। এআশাতেই মানুষ স্বপ্ন দেখে। দুঃখের দিনে আশাই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের মতো এই পৃথিবীর সীমাহীন দুঃখের সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার জন্য ভেলা যেমন একমাত্র ভরসা তেমনি আশাই হচ্ছে জীবন সংসারের অবলম্বন। মানুষ সুখের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে। কিন্তু সুখ পাখির নাগাল পাওয়াও যে বড় কষ্ট। সোনার হরিণের মতো সুখ শুধু পালিয়ে বেড়ায়; কিন্তু মানুষ হাল ছাড়ে না আপ্রাণ চেষ্টা করে তাকে ধরতে। সহস্র দুঃখ-বেদনা আর প্রতিক‚লতার মধ্যেই মানুষ রুখে দাঁড়ায়, সংগ্রামে ব্রতী হয়। কিন্তু তার এই প্রচেষ্টা অনেক সময় ব্যর্থ হয়, সুখ থাকে নাগালের বাইরে। তবু মানুষ স্বপ্ন দেখে আশার ভেলায় ভর করে। কেউ বলে আশা সে তো মরীচিকা, মাইকেল মধুসূদন হাহাকার করে বলেন ‘আশার ছলনে ভুলি, কী ফুল লভিনু হায়, তাই ভাবি মনে কিন্তু আশার অমৃত রসেই উজ্জীবিত হয় মানুষ। আশা না থাকলে মানুষের পক্ষে সংসারধর্ম পালন করা সম্ভবপর হতো না। কেউ কোনো কাজ করত না, মানবজীবনের অস্তিত্ব হয়ে পড়ত বিপন্ন। আশা আছে বলেই মানুষের জীবন গতিশীল। আশাই মানুষকে টিকিয়ে রাখে সোনালি ভবিষ্যতের জন্য। মানুষ যখন চাওয়া পাওয়া হতাশার দ্বন্দ্বে দোদুল্যমান ঠিক তখনই আশা মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায় সম্মুখ পানে।
মন্তব্য : আশা নামের এক অনির্বাণ শিখার আলোকে মানুষ অন্ধকারে খুঁজে নেয় পথ। সংসার সমুদ্রে মানুষ অক্লান্ত প্রচেষ্টার দ্বারা মানুষ সুখ, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ লাভ করে। হতাশাগ্রস্ত মানুষের জীবনে সফলতা নেই। সকলকেই তাই হতে হবে আশাবাদী প্রাণবন্ত মানুষ।
 

“উত্তম নিশ্চিন্তে চলে অধমের সাথে
তিনিই মধ্যম যিনি চলেন তফাতে।”

মূলভাব : উত্তম ব্যক্তির মাঝে তাঁর চরিত্র মাধুর্য যেমন থাকে তেমনই থাকে তার মনের প্রশস্ততা। তাই সে কলঙ্ক, দুর্নাম ও অপবাদের ভয় করে না। কিন্তু মধ্যম শ্রেণির লোক অধমের সাথে ব্যবধান রেখে চলে পিছে মানুষ তাকে অধম জ্ঞান করে।
সম্প্রসারিত ভাব : চরিত্র, প্রবৃত্তি এবং প্রবণতা অনুযায়ী মানুষকে উত্তম, মধ্যম এবং অধম-এ তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যারা উত্তম চরিত্রের অধিকারী তারা সৎ, সাহসী এবং আদর্শবান। তারা বরাবরই দৃঢ় ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তাই তারা নিশ্চিন্তে অধম, পতিত এবং অসৎ ব্যক্তিদের সাথে মিশতে পারেন। এতে করে তিনি ছোট হয়ে যান না বা চরিত্র কলুষিত হবে এমন কোনো ভয়ও তার থাকে না। কারণ তিনি মিথ্যা অপবাদের ভয় করেন না। সে আলোকের কাছে যদি অন্ধকার থাকে তাহলে আলোকের কোনো ক্ষতি হয় না। বরং অন্ধকারই দূরীভ‚ত হয়। চরিত্রবান উত্তম ব্যক্তিদের আমরা পরশপাথরের সাথে তুলনা করতে পারি। পরশপাথরের সান্নিধ্যে এসে সাধারণ পাথরও সোনা হয়ে যায়। তেমনি চরিত্রহীন অধম ব্যক্তি যদি উত্তম ব্যক্তির সংস্পর্শে আসে তাহলে তার জীবনের রূপরেখা পাল্টে যেতে পারে। সকল ধরনের অন্যায় ও অসত্য পরিহার করে সেও শুদ্ধ জীবনযাপন শুরু করতে পারে। কিন্তু সমাজে যারা মধ্যম শ্রেণির মানুষ, তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ততটা উন্নত নয়। ফলে অসৎ মানুষের সঙ্গে যখন তারা মিশতে যায় তখন সব সময় তারা কলঙ্কের ভয়ে ভীত থাকে। তাই তারা অধম ব্যক্তির সংশ্রব সযতে এড়িয়ে চলে। এর ফলে তাদের পক্ষে কোনো মহৎ কাজ করা সম্ভব হয় না। আমাদের এই সমাজে ভালো এবং মন্দ উভয় প্রকার মানুষের বাস। মধ্যম ব্যক্তিরা শুধু ভালো মানুষের সাথে চলতে চায়। মন্দকে ভালো করার কঠিন চেষ্টায় তাঁরা কখনো আত্মনিয়োগ করেন না। তাঁরা কলঙ্ক থেকে শত হাত দূরে থাকতে চান এবং মন্দ লোক সম্পর্কে এক ধরনের ছুঁতমার্গে ভোগেন। ফলে তার থেকে সমাজ কিছুই পায় না। কিন্তু উন্নত চরিত্রের অধিকারী যাঁরা তাঁরা কখনো স্বার্থপরের মতো জীবনযাপন করেন না। কল্যাণের জন্য তাঁরা নিজেদের উৎসর্গ করেন। মিথ্যাকে, জরাকে, অসত্যকে যারা আঁকড়ে পড়ে আছে, তাঁদেরকেই তাঁরা শোনান সত্যের বাণী। জগতের সব মহামানবের অধমের মাঝেই জন্ম নিয়েছেন। তাঁদের সংস্পর্শে অধম পরিণত হয়েছে উত্তমে।
মন্তব্য : আত্মকেন্দ্রিক এবং আপসকামী শ্রেণির মানুষ সমাজে মধ্যম হিসেবে বিবেচিত। গা বাঁচিয়ে চলতেই তাঁরা ভালোবাসেন। কিন্তু উত্তম ব্যক্তিরা সত্যসন্ধানী। তাঁরাই অধমকে আলোর পথ দেখান। তাই অধমের সাথেই মিলেমিশে চলতে তাঁরা কুণ্ঠাবোধ করেন না।
 

শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড
অথবা,  শিক্ষাই জাতির উন্নতির পূর্বশর্ত

মূলভাব : শিক্ষা এমন এক পরশ পাথর যার ছোঁয়ায় একটি জাতি পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। মেরুদণ্ডহীন মানুষ যেমন কল্পনা করা যায় না, তেমনি শিক্ষাহীন কোনো জাতিকেও গণনা করা হয় না। 
সম্প্রসারিত ভাব : সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশের ক্ষেত্রে শিক্ষার বিকল্প নেই। শিক্ষার মাধ্যমে জাতি কুসংস্কার, জড়তা ও হীনতা থেকে মুক্ত হয়ে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। এক্ষেত্রে আদর্শ শিক্ষাই জাতিকে দিকনির্দেশনা দিতে পারে। বর্তমান শিক্ষা-দীক্ষায় অগ্রগামী জাতিগুলোই বিশ্বকে পরিচালিত করছে। শিক্ষা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাধনা ছাড়া কোনো জাতি বড় হতে পারে না। শিক্ষাহীন জাতি মেরুদণ্ডহীন প্রাণীর মতো। মেরুদণ্ডহীন মানুষ জীবন্মৃতের মতো সংসারে জীবনযাপন করে, তার দ্বারা যেমন সমাজ ও দেশের কোনো উন্নতি আশা করা যায় না, তেমনি শিক্ষাহীন জাতিও পদে পদে পঙ্গু হয়ে পড়ে। তাই শিক্ষা একটি জাতির জীবনে মেরুদণ্ড। মেরুদণ্ডহীন মানুষ যেমন এ জগতে অপ্রয়োজনীয়, তেমনি শিক্ষাহীন জাতিও পৃথিবীতে পতিত। নিজেকে চেনার জন্য যেমন শিক্ষা প্রয়োজন, তেমনি জাতীয় অগ্রগতি শিক্ষা ছাড়া অসম্ভব। শিক্ষা মানুষের মানবিক গুণাবলিকে বিকশিত করে এবং তার মাঝে সুকুমার প্রবৃত্তির স্ফ‚রণ ঘটায়। শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ যে জ্ঞান অর্জন করে তা দিয়ে সে জীবনকে ঠিকমতো গড়ে নিতে পারে। উপযুক্ত শিক্ষাগ্রহণ না করলে মানুষ অন্ধকারেই নিমজ্জিত থাকে। প্রাকৃতিক নিয়মে মানুষ জন্মগ্রহণ করলেও মূলত শিক্ষার মাধ্যমেই সে নিজেকে আবিষ্কার করে। যারা নিজেকে নিজে আবিষ্কার করতে পারে না, তারা পেছনে পড়ে থাকে। এ পিছিয়ে পড়া ব্যক্তিরাই জাতিকে এগিয়ে যেতে বাধা সৃষ্টি করে। অশিক্ষিত মানুষ মানেই হচ্ছে অসচেতন এবং অসম্পূর্ণ মানুষ। এ পর্যায়ে পশু ও তার মাঝে বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই। তাই শিক্ষাকে জাতীয় জীবনের মেরুদণ্ড বলা হয়ে থাকে, কারণ শিক্ষার প্রভাবেই মানুষ কুসংস্কার, জড়তা ও হীনতা মুক্ত হয়ে জাতিকে শক্তিশালী করতে পারে। 
মন্তব্য : শিক্ষায় অগ্রসরতার মানদণ্ডে একটি জাতি চিহ্নিত হতে পারে। শিক্ষার মাধ্যমেই কোনো জাতি নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছতে পারে। একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে পৃথিবীর বুকে পরিচিতি লাভ করতে হলে শিক্ষার বিকল্প নেই। 
 

কীর্তিমানের মৃত্যু নেই

মূলভাব : মহাকাল সব কিছুকে ধ্বংস করে দেয়। তারপরও কোনো কোনো কর্ম, ত্যাগ, সৃষ্টি কখনো বিলীন হয় না। তেমনি কোনো কোনো মহৎ কার্যাবলির মাধ্যমে মানুষ মানব জগতে চির অমর হয়ে থাকেন। 
সম্প্রসারিত ভাব : মানবজীবন বিলয়ের অধীন; কিন্তু ধ্বংসের অধীন হয়েও কল্যাণময় কার্যাবলির মাধ্যমে অবিনশ্বর হওয়া যায়। অমরত্ব লাভের একমাত্র পথ নিজস্ব কার্যাবলি। কর্মই মানবজীবনকে মহিমান্বিত করে; বয়সের মধ্যে মানুষ বেঁচে থাকতে পারে না; কারণ তাকে মরতে হবে। মরার পর কেউ তাকে স্মরণ করবে না, বরং সে যদি এ ক্ষুদ্র পরিসরের জীবনে মানবকল্যাণের জন্য কীর্তির স্বাক্ষর রেখে যেতে পারে তবে সে মরে গিয়েও চিরকাল মানব হৃদয়ে অমর হয়ে থাকে। মানুষের দেহের মৃত্যু আছে কিন্তু তার মহত্ব, কীর্তি ও মহিমার কোনো মৃত্যু নেই। তা যুগ যুগ ধরে মানুষের মাঝে চির আহবান হয়ে থাকে। দৈহিক মৃত্যু ঘটলেও তাদের কীর্তির মৃত্যু হয় না। মহামানবেরা তাদের নিজেদের স্বার্থের জন্য কিছুই করেন না। পরের জন্য তারা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে। এ পৃথিবী সৃষ্টি হওয়ার পর এ পর্যন্ত অনেক মানুষই জন্মগ্রহণ করেছে ও পরের জন্য তারা নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। কিন্তু তাদের মধ্যে খুব অল্পসংখ্যকই কর্মগুণে মানুষের হৃদয়ে সমাসীন রয়েছেন। একমাত্র যারা মহত্ব অর্জন করতে পেরেছেন তাদের জীবনই সার্থক। এভাবে কীর্তিমান ব্যক্তিত্ব তাদের সৎকর্মের জন্য অমরত্ব প্রাপ্ত হন। এসব লোকের দৈহিক মৃত্যু হলেও প্রকৃতপক্ষে তারা অমর। সর্বদাই তাঁরা মানবের অন্তরে বিরাজ করে। মানুষ তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে এবং তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। কীর্তিমান ব্যক্তিবর্গের জীবনদর্শন যুগ যুগ ধরে মানুষের পথপ্রদর্শক হয়ে থাকে। সক্রেটিস, প্লেটো, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, গ্যালিলিও প্রমুখ কীর্তিমান ব্যক্তিবর্গের মৃত্যু হয়েছে বহুদিন; কিন্তু আজও তারা চিরভাস্বর মানুষের হৃদয়ে।
মন্তব্য : মানুষ বেঁচে থাকে তার কর্মের মধ্যে, বয়সের মধ্যে নয়। যেসব কীর্তিমান ব্যক্তি মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করে মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁরা অমর। 
আপনার পছন্দের আর দেখুন
WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

Post a Comment

Assalamu Alaikum Wa Rahmatullah
Greetings!
Provide your feedback.