Table of Contents
১) পিতার উপর সন্তানের হক হলো তার জন্য একজন সৎ পরহেজগার মা বাছাই করা। সেজন্য একজন দ্বীনদার মহিলাকে বিয়ের জন্য বাছাই করতে হবে। হাদিস শরীফে আছে, হযরত আবু হুরাইরা (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) বর্ণনা করেছেন, তাজেদারে রেছালাতে মাহবুবে রব্বুল ইজ্জত (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেছেন, কোন মহিলাকে বিয়ে করার পূর্বে ৪টি বিষয় বিবেচনায় রাখতে হয়। (১) সম্পদ (২) বংশ (৩) রুপ (৪) ধার্মিকতা। তোমার কল্যাণ হবে তুমি ধার্মিকতাকে প্রাধান্য দেওয়া।
(সূত্রঃ সহীহ বোখারী শরিফ, কিতাবুন নিকাহ, باب الأكفاء في الدين , ২১ নং পারা, হাদিস নং ৫০৯০।)
হযরত ইবনে ওমর (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) বলেন, রাসুল পাক (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেন, নিশ্চয় দুনিয়ার ধন সম্পদ সব ভোগের বস্তু, তবে তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ হলো একজন নেককার সতী স্ত্রী।
(সূত্রঃ সুনানু ইবনে মাযাহ - নিকাহ, باب فضل النساء , ২য় খন্ড, ৪১২ পৃষ্ঠা, হাদিস নং ১৮৫৫।)
২) পিতার উপর সন্তানের হক হলো- তিনি নি¤œ জাতের মহিলার সাথে বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ না হওয়া। কেননা হীন রমনীর ঔরশে প্রসবিত শিশুদের উপর অবশ্যই হীনতার চাপ পড়ে।
৩) পিতা-মাতার উচিৎ, কোন হাবশীদের সাথে পারস্পরিক আতœীয়তার সম্পর্ক গড়ে না তোলেন। কেননা মাতার কৃষ্ণবর্ণতা শিশুকেও কুৎসিত ও কুলুষিত করে তোলে।
৪) পিতা-মাতার উচিৎ তারা যেন বিসমিল্লাহ্ পড়ে স্বীয় সহবাস এর কাজ সূচনা করেন। অন্যথায়, শয়তান ঐ গর্ভস্থিত শিশুটির জনক হিসেবে দাবী করতে পারে। হযরত ইবনে আব্বাস থেকে রেওয়ায়েত এসেছে সৈয়্যদে আলম নুরে মোজাচ্ছম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেন- যখন তোমরা আপন স্ত্রীর সাথে সহবাস করার ইচ্ছা করো তখন এই দোয়াটি পড়ো।
بِسْمِ اللَّهِ، اللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ، وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا
অর্থাৎ আল্লাহর নামে শুরু করছি হে আল্লাহ আপনি আমরা উভয়কে এবং আমাদের এই মিলনের মাধ্যমে যে সন্তান প্রদান করবেন তাকে শয়তান থেকে হেফাজত রাখুন।
(সূত্রঃ সহীহ মুসলিম শরিফ, নিকাহ অধ্যায়, পৃষ্ঠা-৭৫১, হাদিস নং ১৪৩৮ ও সহীহ বোখারি শরিফ, পারা ২৫, পৃষ্ঠা-৯৪৫।)
৫) পিতা-মাতা উভয়ের উচিৎ মিলনকালে জন্তু ও পশুর ন্যায় উলঙ্গ না হওয়া। কারণ এতে শিশু নির্লজ্জ হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
৬) পিতা-মাতা উভয়ের উচিৎ মিলনকালে লজ্জাস্থানের দিকে না দেখা, কারণ এতে শিশুটি অন্ধ হয়ে যাবার সম্ভবনা থাকে। এ ব্যাপারে ইবনে আব্বাস (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) থেকে একটি বর্ণনা এসেছে যে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেছেন- তোমরা যখন তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করতে যাবে, তখন তার লজ্জাস্থানের দিকে তাকাইওনা কারণ এতে ছেলে অন্ধ হবার সম্ভবনা আছে।
(সূত্রঃ আল কামেল ফি দোয়াফায়ির রিজাল, ২য় খন্ড, ২৬৫ পৃষ্ঠা।)
৭) পিতা-মাতার উচিৎ সহবাসকালে অধিক কথাবার্তা না বলা। এ ব্যাপারে হযরত কাবীছা ইবনে জুহাইব (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) বলেন, সহবাসের সময় অধিক কথাবার্তা বলো না, কারণ এতে শিশুটি বোবা অথবা তোতলা হয়ে যাবার সম্ভবনা আছে।
(সূত্রঃ কানযুল উম্মাল, নিকাহ পর্ব باب محاورات المباشرة , খন্ড-১৬, পৃষ্ঠা-১৫১, হাদিস নং ৪৪৮৯৩।)
৮) পিতার উচিৎ শিশু প্রসব হওয়ার পর পর তার ডান কানে আযান ও বাম কানে একামত বলা। এর ফলে শিশুটি শয়তানের ছোবল প্রতারণা ও উম্মুচ ছিবিয়ান নামক একটি মারাত্মক রোগ থেকে রেহাই পাবে। হুজুর করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত ইমাম হাসান বিন আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) জন্মের পর তিনি স্বয়ং তাঁর ডানকানে আযান দিয়েছেন। ইমাম হোসাইন বিন আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) থেকে বর্ণিত আল্লাহর প্রিয় মাহবুব হুজুর (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন- যে ঘরে শিশু জন্ম লাভ করে এবং তার ডান কানে আযান এবং বাম কানে একামত বলা হয় তবে ঐ ছেলে মেয়ে উম্মুচ ছিবিয়ান মারাত্মক রোগ দূর হয়ে যায়।
(সূত্রঃ বায়হাকী শোফদুল ইমান, খন্ড-৬, পৃষ্ঠা ৩৯০, হাদিস নং ৬১৯, সুনান আবূ দাউদ হাদিস নং ৫১০৫।)
তবে বেশী ভাল হয় যদি ডানকানে ৪ বার আযান বাম কানে ৩ বার একামত পড়া হয়।
(সূত্রঃ বাহারে শরীয়ত, খন্ড ১৫, পৃষ্ঠা ১৫৩।)
৯) পিতা-মাতার উচিৎ খোরমা ও অন্যান্য মিষ্ট দ্রব্য নিজেরা পেষন করে শিশুকে প্রদান করা, যাতে চোষিত বস্তুর আস্বাদনের ফলে শিশুটির চরিত্র ও প্রকৃতি সুষমামন্ডিত হয়। এটাকে আরবীতে تحنيك বলা হয়। উম্মুল মোমেনীন হযরত আয়েশা ছিদ্দিকা (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা) বর্ণনা করেন, লোকেরা রাসূলে খোদা (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে নিজেদের নবজাতক শিশুকে নিয়ে আসতো। তিনি (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের বরকতের জন্য দোয়া করতেন এবং تحنيك করতেন।
(সূত্রঃ সহীহ মুসলিম শরিফ, কিতাবুল আদব, বাবু এছতেহাবুবত তাহনীক, পৃষ্ঠা ১১৮৪, হাদিস নং ২১৪৮, সহীহ বুখারী শরিফ, হাদিস নং ৩৯০৯।)
১০) পিতা-মাতার উচিৎ নবজাতক শিশুর ৭ম অথবা ১৪তম অথবা ২১তম দিনে আকীকার ব্যবস্থা করা। ছেলের জন্য দুটি পশু এবং মেয়ের জন্য একটি পশু দ্বারা আকীকা করা উত্তম। হাদীসে এসেছে- সামুরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সকল নবজাতক তার আক্বিকার সাথে আবদ্ধ। আর এতে আশা করা হয় যেন, শিশুটি বন্ধকী থেকে রেহাই পেয়েছে।
(সূত্রঃ সুনানু আবু দাউদ, হাদিস নং ২৮৩৮।)
১১) পিতা-মাতার উচিৎ শিশুটির পক্ষ থেকে ধাত্রীকে কৃতজ্ঞতা স্বরূপ আকিকা উপলক্ষে জবাইকৃত পশুর একটি রান প্রদান করা।
১২) মাতা-পিতার উচিৎ ৭ম দিবসে শিশুটির চুল মুন্ডন করা।
১৩) পিতা-মাতার উচিৎ শিশুটির চুলগুলো ওজন করে তার সমপরিমান রৌপ্য মুদ্রা ছদকা করে দেয়া। হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান (রাঃ) এর পক্ষ থেকে ১টি বকরী/ছাগল আকীকা দিয়েছেন এবং বলেছেন, হে ফাতেমা, তার মাথা মুÐন কর এবং তার চুল পরিমাণ সদকাহ কর।
(সূত্রঃ মুজামুল আউসাত, হাদিস নং-৫৫৮, ১ম খন্ড পৃষ্ঠা ১৭০, সুনানে আত-তিরমিযী, হাদিস নং ১৫১৯।)
১৪) পিতা-মাতার উচিৎ শিশুটির মাথা মুন্ডনের পর জাফরান নামক সুগন্ধি মালিশ করে দেয়া।
১৫) পিতা-মাতার উচিৎ ৭ম দিবসে শিশুটির নাম রাখা। এমনকি অকালে ভূমিষ্ঠ হলেও নামকরণ করতে হবে। অন্যথায় অভিভাবক আল্লাহর কাছে দায়ী থাকতে হবে।
১৬) পিতা-মাতার উচিৎ শিশুটিকে খারাপ নামে অভিহিত না করা। কারণ অশুভ নামকরণের পরিণতি অশুভ হয়ে থাকে।
১৭) শিশুর প্রতি পিতা-মাতার প্রথম এবং বুনিয়াদী উপহার হলো শিশুকে একটি ভাল নাম উপহার দেয়া যা শিশুটির সারাজীবন ধারণ করবে। এমনকি হাশরের দিনেও ঐ নাম ধরে দোজাহানের খালিক ও মালিক তাকে আহবান করবেন। হযরত আবু দারদা থেকে বর্ণিত- হুজুর পাক ছাহেবে লওলাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন- কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে তোমাদের পিতার নাম যুক্ত করে ডাকা হবে, তাই উত্তম নাম রেখো।
(সূত্রঃ আবু দাউদ শরিফ, কিতাবুল আদাব, হাদিস নং ৪৯৪৮, ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৭৪।)
সুতরাং আব্দুল্লাহ, আব্দুর রহমান, আহমদ, হামেদ প্রভৃতি ইবাদত ও হামদ সম্পর্কিত শব্দগুলো দ্বারা শিশুদের নাম করন করা কিংবা নবী অলীদের নামে নাম রাখা অথবা পূর্ববর্তী মহা মনীষীদের নামানুসারে নাম রাখা অতীব বরকতময় কাজ। বিশেষত মহানবীর এই পবিত্র বরকত ময় নামের উছিলায় শিশুদের ইহ ও পরকালীন কল্যাণ ও মঙ্গল নিহীত রয়েছে।
১৮) পিতা-মাতার উচিৎ শিশুর নাম মুহাম্মদ রাখলে তাকে ডাকার সময় ও অন্যান্য সময়ে সম্মান প্রদর্শন করা।
১৯) সভা সমিতিতে মুহাম্মদ নামের শিশুদের সম্মানার্থে নিজ আসন ছেড়ে তাদের বসাবার ব্যবস্থা করা। এ ব্যাপারে হযরত আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) হতে একটি হাদিস বর্ণিত যে রাসুলে খোদা (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেছেন- যখন তোমরা ছেলের নাম মুহাম্মদ রাখবে তাঁকে সম্মান করার মজলিসে তাকে স্থান করে দিবে। তার নাম ধরে দুর্নাম করবেনা।
(সূত্রঃ তারীখে বাগদাদ, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩০৫।)
২০) পিতা-মাতার উচিৎ শিশুদের মন্দ গালিগালাজ ও প্রহার করার সময় খুব সতর্কতা অবলম্বন করা।
২১) পিতা-মাতার উচিৎ শিশু যা কিছু চায় তা যথা সম্ভব সামর্থ্য থাকা সাপেক্ষে পূরণ করা।
২২) পিতা-মাতার উপর মূল নামের পাশাপাশি একটি কুনিয়ত তথা ডাক নাম রেখে দেয়া। যাতে অন্য কোন খারাপ নাম তার জন্য ডাক নাম হয়ে না যায়। আদর করে কোন সন্তানকে অসম্মান সূচক উপাধীতে ভূষিত না করা উচিৎ। অনেক ক্ষেত্রে এতে অমঙ্গল ডেকে আনে। হযরত আনাস (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) হতে বর্ণিত শাহিন শাহে মদিনা সুরুরে কলব ওসীনা (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেন, তোমরা দ্রæত তোমাদের ছেলেদের ভাল একটি উপাধি রেখে দাও। যাতে করে কোন মন্দ উপাধি লেগে না যায়।
(সূত্রঃ كنزالعمال كتاب النكاح باب السابع الفصل الأول إلا كمال الحديث ٤٥٢٢ج-١٧وص ١٧٦)
২৩) মাতা হোক কিংবা ধাত্রী হোক পরিপূর্ণ দুই বছর দুগ্ধ পানের ব্যবস্থা করা। হ্যাঁ যদি ধাত্রীর কাছে শিশুর দুগ্ধ পানের ব্যবস্থা হয় তবে শর্ত থাকে উক্ত ধাত্রীকে অবশ্যই সৎ নামাজী, সম্রান্ত বংশের মহিলা হতে হবে। আল্লাহ পাকের বাণী
وَالْوَالِدَاتُ يُرْضِعْنَ أَوْلَادَهُنَّ حَوْلَيْنِ كَامِلَيْنِ-
অর্থঃ অবশ্যই নিজ শিশুকে পরিপূর্র্ণ দুই বছর দুগ্ধ পান করাবে।
(সূত্রঃ পারা ২, সূরা বাকারা, আয়াত নং ২৩৩।)
২৪) পিতা-মাতার উচিৎ নীচু জাতের মহিলা কিংবা দুশ্চরিত্রা মহিলার দুগ্ধ পান থেকে নিজ ছেলেকে নিবৃত্ত রাখা। কারণ, দুধ মানুষের স্বভাব ও প্রকৃতিতে পরিবর্তন আনে।
২৫) পিতা-মাতার উচিৎ নিজ শিশু লালন-পালনের জন্য খোরপোষ দুগ্ধ পানসহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর যোগান দেয়া।
২৬) শরীয়তে বর্ণিত সকল দায়িত্ব সমূহ সম্পাদনের পর যা কিছু অবশিষ্ট থাকবে তা মৃত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজন, দরিদ্র ও অভাবী লোকদের মধ্যে সর্বাধিক হকদার হচ্ছে স্ত্রী ও স্বীয় সন্তান-সন্তনী। আর ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রীর অধিকার আদায়ের পরই যা অবশিষ্ট থাকবে তা অন্যান্য লোকদের মাঝে বন্টন করবে।
২৭) পিতা-মাতার উচিৎ শিশুদের প্রতিপালনের ক্ষেত্রে হালাল আয় খেয়ে হালাল জীবিকা যোগানের ব্যবস্থা করা। কারণ নাপাক মাল বা অপবিত্র জীবিকা দ্বারা মানুষের স্বভাব ও প্রকৃতিতে পরিবর্তন ঘটে।
২৮) পিতা-মাতার উচিৎ প্রত্যেক সন্তান-সন্তনীকে যেন একাকী খাবার পরিবেশন না করা। এবং তাদের ইচ্ছানুযায়ী তাদের পছন্দসই উত্তম খাবারের ব্যবস্থা করা। পিতা-মাতা নিজ সন্তানকে নিয়ে এক সাথে আহার করা উচিৎ। আর যদি অধিক পরিমাণ খাবার না থাকে তাহলে শুধুমাত্র স্বীয় সন্তান-সন্তনীদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা।
২৯) পিতা-মাতার উচিৎ আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া জ্ঞাপনার্থে তাদের ছেলে-মেয়েদের সাথে বিনম্র আচরণ করা, তাদেরকে ¯েœহ মমতা সেবা যতœ করা। কোলে কাধে নেয়া, তাদের সাথে হাসি রসাত্মক কৌতুকদায়ক কথোপকথন করা।
৩০) পিতা-মাতার উচিৎ ছেলে-মেয়ের প্রতি কঠোর পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখা। সদা তাদের প্রতি যতœবান হওয়া। এমনকি নামাজও জুমা আদায়ের ক্ষেত্রে তাদের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা।
৩১) পিতা-মাতার উচিৎ নিজ ছেলে-মেয়েকে তাজা ও নতুন ফলমূল প্রদান করা।
৩২) পিতা-মাতার উচিৎ মাঝে মাঝে ছেলে-মেয়েদের জন্য উত্তম খাবারের ব্যবস্থা করা (সাধ্যমতো) এভাবে (উন্নত পোশাক) উন্নত খেলাধুলার ব্যবস্থা করা।
৩৩) পিতা-মাতার উচিৎ শিশুদের ধোঁকা দেয়ার জন্য মিথ্যা প্রতিশ্রæতি না দেয়া। শিশুদের যেসব প্রতিশ্রæতিই ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ যা মূলত: পালনের দৃঢ় ইচ্ছা রয়েছে।
৩৪) পিতা-মাতার উচিৎ কোন খাদ্যদ্রব্য ও পোষাক বন্টন কালে সকল ছেলের মাঝে সমভাবে বন্টন করা। কোন সন্তানকে অন্য সন্তানের উপর প্রাধান্য না দেয়া উচিৎ।
৩৫) পিতা-মাতার উচিৎ কোন সফর থেকে ফিরে আসার সময় নিজ ছেলে-মেয়েদের জন্য কিছু না কিছু তোহফা সঙ্গে নিয়ে আসা।
৩৬) পিতা-মাতার উচিৎ শিশুরা রোগাক্রান্ত হলে তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
৩৭) যত দূর সম্ভব খারাপ ও কষ্টদায়ক চিকিৎসা থেকে দূরে রাখা।
৩৮) পিতা-মাতার উচিৎ শিশুদের মুখ ফুটতেই তাদেরকে আল্লাহু! আল্লাহু! যিকরের শিক্ষা দেওয়া। অতঃপর সূরা ও কালিমায়ে তায়্যেবাহ শিক্ষা দান করা।
৩৯) মাতা-পিতার উচিৎ শিশু যখন বিবেকসম্পন্ন হবে তাদেরকে ভদ্রতা, সদাচরন তথা আদব কায়দা শিক্ষা দেয়া। পাশাপাশি তাদের চাল-চলন, উঠা-বসা, হাসি-তামাশা ও বাচন ভঙ্গির প্রতি তীক্ষè দৃষ্টি রাখা উচিৎ। পিতা-মাতা, শিক্ষক, গুরুজনকে যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করা তাদের প্রতি আনুগত্যের নিয়মাবলী শিক্ষা দেয়া একান্ত দরকার।
৪০) পিতা-মাতার উচিৎ নিজ ছেলে মেয়েদের কুরআন শরীফ শিক্ষাদান করা।
৪১) স্বীয় সন্তানদেরকে লেখাপড়া শিক্ষা দেয়ার জন্য একজন সৎ খোদাভীরু সহীহ আকিদা ওয়ালা, বয়স্ক শিক্ষকদের কাছে হস্তান্তর করা। আর মেয়েদেরকে আদর্শ শিক্ষিকার কাছে লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা।
৪২) পিতা-মাতার উচিৎ নিজ ছেলে-মেয়েদেরকে কুরান শরীফ খতম করার পর সর্বদা কুরআন শরীফ পাঠের চর্চার জন্য তাগিদ দেয়া।
৪৩) পিতা-মাতার উচিৎ নিজ ছেলে-মেয়েদের ইসলামী আকিদা ও সুন্নাত এর শিক্ষা দেয়া, কারণ এ সময়ের শিক্ষাদান মানে পাথরে খুদাই করার ন্যায়। অর্থাৎ শৈশবকালের শিক্ষা শিশুদের কচিমনে চিরদিনের জন্য রেখাপাত করে।
৪৪) পিতা-মাতার উচিৎ সন্তানদেরকে অন্তরে বিশ্বনবী রহমতে দো-আলম সরওয়ারে কওনাইন (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর প্রতি অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা ও প্রগাঢ় ভালবাসার বীজ বপন করা, কারণ রাসুল প্রেমই প্রকৃত ঈমান।
৪৫) পিতা-মাতার উচিৎ ছেলে মেয়েদেরকে মহানবী (সাল্লাল্লাহু তায়াল আলাইহি ওয়াসাল্লাল) এর পবিত্র বংশধর, সাহাবায়ে কেরাম, বুজুর্গানে দীনের প্রতি সম্মান যথার্থ শ্রদ্ধা ভক্তি প্রদর্শন করার শিক্ষা দান করা। কারণ এদের প্রতি শ্রদ্ধা ভক্তি প্রদর্শনে কেবল ঈমান ও সুন্নাহর অংশ নয় বরং এটা ঈমানের রক্ষা কবচও বটে।
৪৬) পিতা-মাতার উচিৎ ছেলে-মেয়েদের বয়স সাত বছর হলে মৌখিকভাবে নামাজ আদায়ের জন্য তাগিদ দেয়া। দশবছরে পা দিলে নামাজের জন্য নির্দেশ দেয়া ব্যত্যয় ঘটলে শাস্তির ব্যবস্থা করা।
৪৭) পিতা-মাতার উচিৎ নিজ নিজ ছেলে-মেয়েদেরকে ধর্মীয় জ্ঞান তথা ওযু, গোসল, নামাজ ও রোজার মাসয়ালা-মাসায়েল শিক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করা। আল্লাহর উপর অগাধ বিশ্বাস, দৃঢ় আস্থা, ধৈর্য, সহিষ্ণুতা, একনিষ্ঠতা, লজ্জা, বাক স্বাধীনতা ইত্যাদির যাবতীয় শিক্ষা দান করা। পাশাপাশি লোভ লালসা মোহ, দুনিয়া আসক্তি, লৌকিকতা, দম্ভ অহমিকা, বিশ্বাসঘাতকতা, মিথ্যা, অত্যাচার, পরচর্চা, অশ্লীলতা, হিংসা-বিদ্বেষ ইত্যাদি গর্হিত কাজগুলো বর্জন করার শিক্ষা দেয়া।
৪৮) পিতা-মাতার উচিৎ শিশুদের লেখাপড়া শেখানোর ব্যাপারে বিনম্র স্বভাবের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করা।
৪৯) পিতা-মাতার উচিৎ নিজ ছেলে-মেয়েদেরকে মাঝেমধ্যে বকুনী প্রদান করা, ভীতি প্রদর্শন করা। তবে কখনোই তাদের অমঙ্গল কামনা করা উচিৎ নয়। কারণ, বদদোয়া মানুষের জীবন গড়তে সহায়ক নয় বরং ধ্বংস ও অবণতির মূল কারণ।
৫০) পিতা-মাতার উচিৎ তারা যেন সন্তানের মূখে প্রহার না করা।
৫১) পিতা-মাতার উচিৎ তাঁরা যেন অধিকাংশ সময়ে ছেলে-মেয়েদের সামনে লাঠি ও বেত স্থাপন করেন, যাতে তাদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার হয়। আর এ ভীতি সঞ্চারই তাদের জন্য যেন যথেষ্ট হয়।
৫২) পিতা-মাতার উচিৎ শিশুর চিত্তবিনোদনের জন্য শিক্ষাজীবনের একাংশ খেলাধুলার জন্য ব্যয় করার সুযোগ প্রদান করা
৫৩) পিতা-মাতার উচিৎ ছেলে-মেয়েদেরকে খারাপ সঙ্গ বর্জন করার উপদেশ প্রদান করা। কারণ অসৎ মন্দ মানুষের সর্বনাশ ডেকে আনে।
৫৪) পিতা-মাতার উচিৎ নিজ সন্তানদেরকে কুস্তি উৎসব, মীনাবাজার, যৌনউত্তেজনাপূর্ণ গজল ও গানের আসর থেকে এবং অশ্লীল বই পুস্তক পাঠ করা থেকে বিরত রাখা। কারণ নরম কাঠকে যেদিকে বাঁকানো হবে সেদিকেই বেঁকে যাবে। যৌনত্তেজনার আশংকা থাকার কারনে নারীদেরকে সূরা ইউসুফের অনুবাদ পাঠ পরিহার সংক্রান্তে বিশুদ্ধ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। সুতরাং শিশুদেরকে অশ্লীল ছায়াছবি গান নাচ ও কবিতার আসরে অংশগ্রহণ করতে দেয়া ঠিক ও যুক্তিযুক্ত হবেনা।
৫৫) পিতা-মাতার উচিৎ ছেলে-মেয়ে ১০ বছরে পৌঁছলে তাদেরকে প্রহার পূর্বক নামাজ পড়ার নির্দেশ প্রদান করা।
৫৬) মা বাবার উচিৎ ছেলের খৎনা করা, ছেলেদের খাতনা করানো একটি অন্যতম সুন্নাত। হাদিসে এসেছে, হযরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান এবং হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুমার সপ্তম দিবসে আকীকা এবং খতনা করিয়েছেন।
(সূত্রঃ আল-মুজামুল আওসাত : ৬৭০৮)
৫৭) পিতা-মাতার উচিৎ ছেলে-মেয়ের বয়স ১০ হলে পৃথক বিছানা ব্যবস্থা করা রাসুলে পাক (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেন, যখন তোমাদের ছেলে-মেয়ে সাত বছরে পৌঁছে তখন নামাজের আদেশ দাও, দশ বছরে পৌঁছলে নামাজের জন্য প্রহার করো এবং বিছানা পৃথক করে দাও।
(সূত্রঃالمستدرك كتاب الصلوة -باب فضل الصلوة الخمسه - الحديث ٧٤٨.ج ١ . ص ٤٤٩)
৫৮) পিতা-মাতার উচিৎ তাদের যুবক যুবতী ছেলে-মেয়েদের যেন বিবাহের ব্যবস্থা করেন। আর বিবাহের ক্ষেত্রে জাতি, বংশ, চরিত্র, আকৃতির প্রতি লক্ষ্য রাখা বাঞ্চনীয়।
৫৯) পিতা-মাতা যদি আশংকা করেন যে, ছেলে-মেয়ে তাদের কথার বিরোদ্ধাচরণ করবে, অমান্য করবে, তাহলে তাদের উচিৎ তাদেরকে নির্দেশমূলক কোন কথা না বলে পরামর্শমূলক কথা বলা।
৬০) পিতা-মাতার উচিৎ নিজ ছেলে-মেয়েদেরকে তাদের উত্তরাধিকার সম্পদ থেকে বঞ্চিত না করা।
৬১) পিতা-মাতার উচিৎ তাদের মৃত্যুর পরও নিজ সন্তান-সন্তনির সম্পদের খেয়াল রাখা। অর্থাৎ মৃত্যুর পরে তার রেখে যাওয়া সম্পদের ৩ ভাগের ১ ভাগের অধিক সম্পদ নষ্ট না করা। ছেলে-মেয়েদের জন্য কমপক্ষে ৩ ভাগের ২ ভাগ সম্পদ রেখে যাওয়া।
নিম্নলিখিত অধিকারগুলো কেবল ছেলেদের জন্য প্রযোজ্য
৬২) পিতা-মাতার উচিৎ তারা যেন আপন ছেলেদের হাতের লেখা শিক্ষা দান করা।
৬৩) স্বীয় ছেলেদেরকে পাঠদানের ব্যবস্থা করা।
৬৪) তারা যেন স্বীয় ছেলেদেরকে যুদ্ধবিদ্যা তথা সামরিক প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করা।
৬৫) পিতা-মাতার উচিৎ তারা যেন স্বীয় ছেলেদের সূরা মায়েদা শিখিয়ে দেয়।
৬৬) পিতা-মাতার উচিৎ স্বীয় ছেলেদেরকে প্রকাশ্যে খতনা করার ব্যবস্থা করা।
নিম্নলিখিত অধিকারগুলো শুধু মেয়েদের জন্য প্রযোজ্য
৬৭) পিতা-মাতার উচিৎ মেয়ে জন্ম হলে রাগ না করা বরং এটাকে আল্লাহর নিয়ামত মনে করা। রাসুলে পাক (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেন, যার কন্যা সন্তান হয়েছে এবং সে তার মনে কষ্টে নেয়নি, খারাপ মনে করেনি এবং মেয়ের উপর ছেলেকে প্রাধান্য দেয়নি আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতে দাখিল করবেন।
(সূত্রঃالمستراك للحاكم . كتاب البروالصله . الحديث ٧٤٢٨ ، ج ٥ ، ص ٢٤٨ )
৬৮) পিতা-মাতার উচিৎ তারা যেন নিজ নিজ মেয়েদেরকে সুতা কাটা, সুতা পাঁকা, সেলাই ও রান্নার কাজ শিক্ষাদান করেন।
৬৯) পিতা-মাতার উচিৎ তারা যেন তাদের মেয়েদেরকে সূরা-নুর শিক্ষা দেন।
৭০) তারা যেন ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের অধিক যতœ নেন। কারণ স্বভাব ও প্রকৃতিগতভাবে মেয়েদের মন অতীব কোমল ও দূর্বল হয়ে থাকে।
৭১) পিতা-মাতার উচিৎ তারা যেন মেয়েদেরকে এমন শিক্ষা না দেন যেখানে ফিতনার আশংকা থাকে।
৭২) পিতা-মাতার উচিৎ মেয়ের বয়স ৯ বছর হলে বিছানা পৃথক করে দেয়া।
৭৩) মেয়ের ৯ বছর বয়সে থেকেই তাকে বিশেষ তত্ত¡াবধানের মাধ্যমে লালন পালনের ব্যবস্থা করা।
৭৪) পিতা-মাতার উচিৎ যে সমস্ত বিবাহের অনুষ্ঠানে নাচ-গান পরিবেশিত হয় সে ধরনের অনুষ্ঠান থেকে মেয়েদেরকে বিরত রাখা। যদিও আপন সহোদর ভাই তার সাথে থাকে। কারন গান যাদুর ন্যায়, আর মহিলা হলো টুকরো কাঁচের ন্যায়। যাতে সামান্য আঘাত লাগাতেই ভেঙ্গে পড়ে। আত্মীয় নয় এমন লোকের কাছে যাওয়া মোটেই সমীচীন নয়।
৭৫) ঘরে কোন খাদ্য তা উপহার দ্রব্য আনলে তা আগে মেয়ের হাতে দেয়া উচিৎ।
৭৬) পিতা-মাতার উচিৎ বন্টনের ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ের মাঝে কোন পার্থক্য না করা।
৭৭) পিতা-মাতার উচিৎ তারা যেন নিজ মেয়েদেরকে দালানের উপর তলায় থাকার অনুমতি না দেয়।
৭৮) পিতা-মাতার উচিৎ তারা যেন নিজ মেয়েদেরকে বাসায় অভিজাত পোষাক পরিধান করান এবং রকমারি অলংকার সাজসজ্জায় সজ্জিত রাখেন। যাতে অধীর আগ্রহে তাদের বিয়ের প্রস্তাব আসে।
৭৯) পিতা-মাতার উচিৎ মেয়েকে বিয়ে দেয়ার সময় কুফু বা সমতা বিধান করেন। কুফু পাওয়া গেলে অনতিবিলম্বে বিয়ের ব্যবস্থা করা।
৮০) পিতা-মাতার উচিৎ ১২ বছর বয়সে নিজ মেয়েদেরকে বিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৮১) পিতা-মাতার উচিৎ তারা যেন নিজ মেয়েদেরকে কোন ফাসিক, পাপীষ্ঠ, বদমাযহাবী ও বাতিল ফিরকার সাথে বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ না করা।
উপরোক্ত ৮১টির অধিকার গুলো মরফু হাদিসের আলোকে বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে কিছু অধিকার আছে মুস্তাহাব তথা বর্জন করলে অভিভাবককে দায়ী থাকতে হবে না। কিন্তু কতিপয় এমন অধিকার আলোচিত হয়েছে যা বর্জন করলে পিতা-মাতাকে পরকালে দায়বদ্ধ থাকতে হবে। সেজন্য ছেলে-মেয়েকে উত্তম পরিবেশে লালন-পালন পিতা-মাতার অন্যতম দায়িত্বও বটে।
দাওয়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা ইলিয়াছ আক্তার কাদেরী তার লিখিত কিতাবের ১৭ পৃষ্ঠায় একটি ঘটনা অবতারণ করেছেন। একদা এক অপরাধীর মৃত্যুদন্ড সাব্যস্ত হলো। ফাঁসির কাষ্ঠে নিয়ে যাবার পূর্বে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, তার কোন শেষ ইচ্ছা আছে কিনা। তখন সে বললো, আমি একটু আমার মায়ের সাথে দেখা করতে চাই। তার ইচ্ছা পূরণের ব্যবস্থা করা হলো। যখন সে মায়ের সামনে আসলো মায়ের কাছাকাছি গিয়ে কিছু বুঝে উঠার আগেই সবার সামনে মায়ের কান কেটে হাতে নিয়ে ফেলল। সবাই মন্তব্য করলো ফাঁসি হবে জেনে মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটেছে মনে হয়। সে তখন জবাব দিল, না আমার মস্তিষ্ক পুরোপুরি ঠিক আছে। তবে আমার ফাঁসির কাষ্ঠ পর্যন্ত পৌঁছানোর সকল দায়দায়িত্ব আমার মাতার। কেননা আমি ছোট বেলায় যখন কোন স্থান থেকে কোন টাকা পয়সা চুরি করে আনতাম তখন আমার মাতা আমাকে তিরস্কার বা নিরুৎসাহিত করার স্থলে আমার প্রশংসা করেছে আমাকে বাহবা দিয়েছে। এতে আমার দুঃসাহস আরো বেড়ে গেল। দেখতে দেখতে আমি অপরাধ জগতের গড ফাদার হয়ে গেলাম। পরিণতিতে আমাকে আজকে ফাঁসির মঞ্চে যেতে হচ্ছে। এজন্য আমি আমার মায়ের কান কেটে নিলাম। যা হোক মাধ্যমিক পর্যায়ে মাদ্রাসার এরকম একটি কবিতার শিরোনামে অন্যতম বিদ্যালয়। পিতা-মাতা আমানত দারীর সাথে সন্তানের হক আদায় করলেন। ছেলে-মেয়ে পিতা-মাতার হক আদায় করারতো প্রশ্ন আসবে। শুরুটা পিতা-মাতাকে করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা সকলকে সঠিক উপলব্ধি দান করুন।