Table of Contents
কি— কিস্তি।
কিত্তা— জমির অংশ।
খারিজ— বাতিল।
গং — গয়রহ, অন্যান্য, সহযোগীরা, সবাই।
চৌ:/চৌং — চৌহদ্দি/ চারদিকের সীমানা।
চৌং— চৌধুরি।
ছানি— পুনঃর্বিবেচনার প্রার্থনা। একই বিষয়ে পুনরায় বিচার প্রার্থনা।
ছোলেনামা— আপস।
জ— জমা।
জং— জওজ, স্বামী।
তম— তসমুক (বন্ধকনামা)।
দিং— -দিগর, -দিগের, -দের (বহুবচন প্রকাশে ব্যবহৃত)।
পিং/ পীং— পিতা।
বিতং— বিস্তারিত।
মং— মোট (টাকা)।
মোং— মোকাম (দোকান বা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ব্যবহারের বিষয়।)
মো:/ মোং—মোহাম্মদ।
সাং— সাকিন, ঠিকানা।
বিস্তারিত ও বিবিধ
সাং অর্থ সাকিন, সাকিম। সাকিন বা সাকিম শব্দের অর্থ ঠিকানা, বাসস্থান। গং অর্থ গং আরবি শব্দ গয়রহ (গায়রাহ غيره) এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এর অর্থ অন্যান্য, অন্যরা, সমূহ। অমুক [ব্যক্তিনাম] ও অন্যান্য বা তার সহযোগীগণ। এক সময়ে শব্দসংক্ষেপ করে প্রথম বর্ণটি লিখে অনুস্বার বা বিসর্গ দেয়া হতো। এই নিয়মে সাকিন হয়েছে সাং, গয়রহ হয়েছে গং, মোহাম্মদ হয়েছে মো:, তারিখ হয়েছে তাং, নম্বর হয়েছে নং ইত্যাদি। দং অর্থ দরুন, বাবদ, দখল। মোং অর্থ মোকাম। এর অর্থ আবাস, বাসস্থান হলেও মূলত বাণিজ্য স্থান। কিঃ অর্থ কিস্তি। কিন্তু শব্দটি দফা, বার, ক্ষেপ এই অর্থেও ব্যবহৃত হয়। এজমালি/ইজমালি অর্থ যৌথ, সংযুক্ত, বহুজনের একত্রে। যেমন: এজমালি সম্পত্তি বলতে যৌথ মালিকাধীন সম্পত্তিকে বোঝায়।
কিত্তা/ কিতা অর্থ আরবি ‘ক্বত্বহ’ শব্দজাত। এর অর্থ অংশ, জমির ভাগ, পদ্ধতি। ছানি অর্থ আরবি শব্দ, অর্থ দ্বিতীয়বার। পুনঃর্বিবেচনার প্রার্থনা।
যেমন: ছানি মামলা। নিম অর্থ ফারসি শব্দ। এর অর্থ অল্প, অর্ধেক, অধস্তন বা অধীন ইত্যাদি। ছোলেনামা = মীমাংসা, আপস। ছোলেনামা মানে আপস-মীমাংসাপত্র। জঃ = জমা। সাধারণ অর্থে ‘জমা’ বলতে সঞ্চিত, রাশিকৃত। নং = নম্বর বা সংখ্যা অর্থে বোঝানো হয়। পঃ = পঞ্চম বা পাঁচের স্থানীয় ভাষ্য। পোঃ অর্থ পোস্ট অফিস বা ডাকঘর বোঝানো হয়। মহঃ অর্থ মহকুমা। ব্রিটিশ আমলে জেলার একটি প্রশাসনিক অংশকেই মহকুমা বলা হতো। এখন মহকুমাগুলো জেলার পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে।
মুসাবিদা অর্থ খসড়া তৈরি করা। মুসাবিদাকারক মানে যিনি দলিল লেখেন। হিঃ হলো হিসাব শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ। চৌঃ হলো চৌহদ্দি শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ। চৌহদ্দি শব্দের অর্থ হচ্ছে চারধারের সীমানা। তঃ/তপঃ অর্থ তফসিল, তহশিল। তামাদি একটি ফারসি শব্দ। এর অর্থ নির্ধারিত সময়সীমা। বিতং অর্থ বিস্তারিত বিবরণ, কৈফিয়ত, বৃত্তাত অর্থে ব্যবহূত হয়। মাং/ মাঃ অর্থ মারফত। সহঃ অর্থ সহকারী, যিনি কাজে সহযোগিতা করেন। সুদিখত অর্থ একশ্রেণির বন্ধকি দলিল। তমঃ অর্থ তমসুক। আরবি শব্দজাত, যার অর্থ দলিল, ঋণ-স্বীকারপত্র বা খত। বন্ধকি তমসুক মানে হলো বন্ধকনামা বা বন্ধকি বা বন্ধকি খত। হলফ অর্থ সত্য বলার জন্য যে শপথ করা হয়। হলফকারী মানে যিনি সত্যায়ন করেন।
হলফ অর্থ সত্য বলার জন্য যে শপথ করা হয়। হলফকারী মানে যিনি সত্যায়ন করেন। খারিজ: সাধারণ অর্থে বাতিল করা হয়েছে এমন বোঝায়। ভূমি আইনে একজনের নাম থেকে অন্যজনের নামে জমির মালিকানা পরিবর্তন করে নেওয়াকে খারিজ বা জমাখারিজ বলে। মৌরাশি: পুরুষানুক্রমে কোনো ভূমি ভোগ দখল করাকে মৌরাশি বলে। বায়া (Vender): বিক্রেতা, বিক্রেতার সম্পাদিত দলিলকে বলে বায়া দলিল। বং/ বকলম: বাকালাম থেকেই বকলম। নিরক্ষর ব্যক্তির পক্ষে, নিরক্ষর ব্যক্তির পক্ষে যে স্বাক্ষর করে। নিরক্ষর ব্যক্তি টিপসই দেয়; বকলম ব্যক্তি নিজে সই করে নিরক্ষর ব্যক্তির সেই টিপসই নিশ্চিত করে।
ইং, তাং, নং, চৌং : অধিকাংশ বাঙালি তারিখের পর ‘ইং’ বলে একটা ‘চিহ্ন’ লিখে থাকে। তারিখ, নম্বর, চৌধুরী— এসব শব্দকেও লেখা হয় তাং, নং, চৌং রূপে। কবে এ প্রবণতার সূচনা তা ঠিক করে বলা সম্ভব নয়। তবে এসব চলছে দীর্ঘদিন ধরে- শিক্ষিত, শিক্ষার আলোকবঞ্চিত নির্বিশেষে। তারিখ, নম্বর, চৌধুরীর প্রভৃতির সংক্ষিপ্তরূপ হতে পারে তা. ন. চৌ. প্রভৃ। কিন্তু সংক্ষেপ চিহ্নের পরিবর্তে অনুস্বর (ং) বর্ণ ব্যবহার আধুনিক প্রমিত বাংলা বানান অনুযায়ী সমীচীন নয়। সংক্ষেপ চিহ্ন (.) একটা বিরাম চিহ্ন, পক্ষান্তরে অনুস্বর (ং) হচ্ছে একটা বর্ণ। তারিখ লেখার পর অনেকে ‘ইং’ লিখে থাকেন। ‘ইং’ কি ইংরেজির সংক্ষিপ্ত রূপ? সংক্ষিপ্ত চিহ্নের (.) স্থলে বসানো হলো একটি বর্ণ (ং)। অধিকন্তু, পৃথিবীতে ইংরেজি সাল বলে কোনো সাল নেই। তাই তারিখের পর ‘ইং’ লেখা ভুল। খ্রিষ্টীয় সালকে ইংরেজি সাল বলা বিধেয় নয়।